পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নগরে তিনটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমোদন দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের মতামত সাপেক্ষে ১৭টি শর্তের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার এই অনুমোদন দেয় জেলা প্রশাসন। যদিও সিটি করপোরেশন ১০টি অস্থায়ী হাট বসানোর জন্য আবেদন করেছিল।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, নগরের তিনটি স্থায়ী হাট হচ্ছে সাগরিকা বাজার, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের হাট। আর এবার অস্থায়ী হাটের জন্য গরু বাজার (নূর নগর হাউজিং এস্টেট), সল্টগোলা রেল ক্রসিং-সংলগ্ন হাট ও দক্ষিণ পতেঙ্গার বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টি কে গ্রুপের খালি মাঠের জায়গায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি অস্থায়ী হাট দ্রুত সময়ের মধ্যে ইজারা দেওয়া হবে। পবিত্র ঈদুল আজহার আগের ১০ দিন হাটগুলো বসবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আসলে নগরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও হাট বসানোর ব্যাপারে একাধিক আবেদন পড়েছে। তাই কোন হাটকে কী কারণে অনুমোদন দেওয়া হয়নি, তা না দেখে বলা যাচ্ছে। তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলমের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তবে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর জন্য ১৭টি শর্ত বেঁধে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অস্থায়ী পশুর হাটবাজার প্রধান সড়ক থেকে ন্যূনতম ১০০ গজ দূরে সুবিধাজনক স্থানে বসাতে হবে, যাতে কোনো অবস্থাতেই প্রধান সড়কের যানবাহন চলাচলে বিঘ্নের সৃষ্টি না হয়; পশুর হাটবাজারের মাঠের চৌহদ্দির বাইরে ও রাস্তায় কোনো পশু রাখা যাবে না বা খুঁটি স্থাপন করা যাবে না; করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও বিস্তার প্রতিরোধে পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এ ছাড়া কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার একমুখী চলাচল থাকতে হবে, অর্থাৎ প্রবেশপথ ও বহির্গমনের পথ পৃথক থাকতে হবে। পাশাপাশি সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে যেন কোনো রকমের জটলার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে; বৃদ্ধ ও শিশুদের পশুর হাটে প্রবেশ নিরুৎসাহিত করতে হবে; অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়কে উৎসাহ প্রদান করতে হবে; পশুর হাটে ইজারাদারদের নিজস্ব পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে; সব পশুর হাটে পশুর সুস্থতা যাচাই করার জন্য ভেটেরিনারি চিকিৎসক বা সার্জনের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; বাজার এলাকা নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করতে হবে; পশুর হাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইজারাদার কর্তৃক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
রাস্তায় পশু পরিবহনের সময় ইজারাদার কিংবা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি কর্তৃক কোনো প্রকার পশু পরিবহনকারী গাড়ির পথ পরিবর্তন কিংবা নিজস্ব হাটে পশু নিতে বাধ্য করা যাবে না।