রোববার সকাল ছয়টায় জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় পদ্মা সেতু। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেতু দেখতে আসা মানুষের ভিড় বাড়ে। তাঁরা টোল প্লাজার কাছ থেকে বিভিন্ন পরিবহনে উঠে সেতুতে গিয়ে নেমে যাচ্ছেন। সেতু দিয়ে হাঁটছেন, ছবি তুলছেন। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করছেন। মানুষের এই উচ্ছ্বাস ঠেকাতে পারছেন না সেতু বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর থেকে ২০ তরুণ সকাল ১০টার দিকে নাওডোবার টোল প্লাজার সামনে আসেন। তাঁরা হেঁটে সেতুতে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে একটি খোলা পিকআপ ভাড়া করে পদ্মা সেতুতে যান। সেতুর কিছু অংশ গিয়ে নেমে পড়েন। এরপর হেঁটে সেতুর মাওয়া প্রান্তে পৌঁছান।
ওই তরুণদের একজন জামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের টাকায় ভালোবাসার সেতু নির্মিত হয়েছে। সেই সেতু ছুঁয়ে দেখব না, কীভাবে হয়? শত বাধা পেরিয়ে গর্বের সেতু পেয়েছি। তাই তো বাধা পেরিয়ে সেতুতে হেঁটেছি, ছবি তুলেছি। যদিও ঝুঁকিপূর্ণ, তবু আবেগের জায়গা থেকে ঝুঁকি নিয়ে স্বপ্ন ছুঁয়েছি।’
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুপুরে জাজিরার নাওডোবায় এসেছেন রেবেকা সুলতানা। সেখানে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল, ইলিশের ভাস্কর্য ঘুরে দেখেন। এরপর ভাড়া করা একটি গাড়ি নিয়ে সেতুতে ওঠেন। রেবেকা প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা নদী এবং এই নৌপথের সঙ্গে তাঁদের অনেক সুখ-দুঃখের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সেই নদীতে সেতু হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেতু নির্মিত হওয়ায় তাঁরা গর্বিত।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সেতু খুলে দেওয়ার পর থেকেই যানবাহন ও মানুষের ভিড় বেড়েছে। ঘুরতে আসা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন। তাঁরা যাতে সেতুতে হাঁটাহাঁটি করতে না পারেন, সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ছয়টা থেকে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু করা হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। টোল প্লাজার আশপাশে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন। তাঁদের নিরাপদ দূরত্বে রাখতে সেতু বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন। তাঁদের কাছে তথ্য এসেছে, অনেকে সেতুতে নেমে হাঁটছেন। অনেকে হেঁটেই সেতু পার হচ্ছেন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণে সেতু বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।