পদ্মা সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১০ ও ১১ নম্বর পিয়ারের (খুঁটি) ওপর বসানো হয়েছে ৩৯তম স্প্যান (২-ডি)। ফলে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৫ দশমিক ৮৫০ কিলোমিটার। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে স্প্যানটি বসানো হয়।
৩৮তম স্প্যানটি বসানোর ৭ দিনের মাথায় এই স্প্যান বসানো হলো। সম্পূর্ণ সেতু দৃশ্যমান হতে আর মাত্র দুটি স্প্যান বসানো বাকি রইল। ২১ নভেম্বর মাওয়া প্রান্তের ১ ও ২ নম্বর খুঁটির ওপর ৩৮তম স্প্যানটি বসানো হয়েছিল।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটের দিকে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৯তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত খুঁটির উদ্দেশে রওনা হয়। মাঝপদ্মার ওই দুটি খুঁটিতে অল্প সময়ের মধ্যে স্প্যানটি পৌঁছায়। কারিগরি সমস্যা না থাকায় এদিনই স্প্যানটি বসিয়ে দেওয়া হয়। আগামী ৬ বা ৭ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর খুঁটিতে ৪০তম স্প্যান হবে। পরবর্তী স্প্যান দুটি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে প্রস্তুত আছে।
এদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব। এর মধ্যে গত ৩১ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী ১ হাজার ১৬৫টির বেশি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে ১ হাজার ৬৪৬টি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৯টি স্প্যান। ৩০১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে গৃহীত এই প্রকল্পের বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯০ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ০৩ ভাগ। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ ভাগ। এ বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৩৭৯৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সংশোধিত তারিখ অনুসারে ২০২১ সালের জুন মাসে সেতুর সব ধরনের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।