পতাকা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত জায়গায় গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা

মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলা উপলক্ষে ৫০টি জাতীয় পতাকা নিয়ে ট্রাকে করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শরীয়তপুরে বিভিন্ন এলাকায় রোড-শো করেন। আজ বুধবার জেলা শহরের ঋষিপাড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

‘মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলা’ উপলক্ষে শরীয়তপুরে ৫০টি জাতীয় পতাকা নিয়ে রোড শো করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন এ রোড শোর আয়োজন করে। এ র‍্যালির নাম দেওয়া হয় সুবর্ণজয়ন্তী র‍্যালি।

২১ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে রোড শোটির যাত্রা শুরু হয়। এরপর ৬টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানে ৫০টি পতাকা বহনকারী ট্রাকটি নিয়ে যান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। প্রতিটি উপজেলায় তাঁদের স্বাগত জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁদের হাতে ফুল, বই ও স্মারক তুলে দেওয়া হয়। আজ বুধবার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রোড শোটি শেষ করা হয়।

রোড শোতে অংশ নেওয়া ট্রাকটি ৫০টি জাতীয় পতাকা ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। ট্রাকে দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহাবুবুল ইসলাম। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানে রোড শো থামিয়ে একাত্তরে দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করার গল্প ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে আহ্বান জানান তাঁরা।

রোড শোতে অংশ নেয়া যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ বলেন, ‘ভয়াল মার্চে আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ মাতৃকাকে রক্ষার জন্য যুদ্ধে যাই। ৯ মাসের বিভীষিকাময় যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে, পাকিস্তানিদের পরাজিত করে অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা ছিনিয়ে এনেছি। ৫০ বছর আগে পতাকা বহন করে গ্রামে ফিরে যে আনন্দ ও স্বস্তি পেয়েছিলাম, আজ পতাকা বহন করে রোড শোতে অংশ নিয়ে সে রকম আনন্দ লাগছে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ‘জাতীয় পতাকা বহন করা অন্য রকম মুক্তির স্বাদ। একাত্তর সালে লাখো প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া পতাকা বহন করে আবার রাস্তায় নেমেছি নতুন প্রজন্মকে জাগ্রত করতে।’

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের মনে জাগ্রত করা তাঁদের কর্তব্য। পূর্বসূরিদের জীবন ও ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় পতাকা। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে অবদান রেখেছেন, সেই গল্প নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে রোড শোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনেক কষ্ট করে এ উদ্যোগে শামিল হওয়ায় তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জেলা প্রশাসক।