চট্টগ্রামের পটিয়ায় স্কুলের পুকুরে ডুবে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার ধলঘাট দক্ষিণ সমুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষার্থীর নাম নিশান মল্লিক (১০)। সে ধলঘাট ইউনিয়নের সুজন মল্লিকের ছেলে।
নিশানের চাচা সন্তোষ দে প্রথম আলোকে বলেন, নিশান মল্লিক প্রতিদিনের মতো গতকাল বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয় ছুটির সময় বিকেল চারটার দিকে নিশানের মা প্রিয়াঙ্কা মল্লিক ছেলেকে নিতে যান। তবে ছুটির পর নিশানকে না পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ের আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে আবার বিদ্যালয়ে ফিরে গিয়ে দেখেন, বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। পরে নিশানের এক সহপাঠী নিশানের মাকে জানায়, টিফিনের বিরতির সময় বিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল খেলার পর নিশানকে বিদ্যালয় পুকুরে নেমে হাতমুখ ধুতে দেখা গেছে।
বিষয়টি জানার পর নিশানের স্বজনেরা বিদ্যালয়ের পুকুরে খোঁজাখুঁজি করে নিশানকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তাকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক নিশানকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা জিয়াউদ্দিন মোহাম্মদ সাকিব বলেন, বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে মৃত অবস্থায় নিশান মল্লিক নামের এক শিশুকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল।
নিশানের স্বজনদের অভিযোগ, স্কুলের শ্রেণিকক্ষে নিশানের ব্যাগ, টিফিন বক্স ও কাপড়চোপড় পড়ে থাকলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা না দেখেই ওই কক্ষে তালা লাগিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেপাল কৃষ্ণ মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে বিদ্যালয়ের ফুটবল দল বিদ্যালয় ছুটির পর মাঠে অনুশীলন করছিল। নিশান মল্লিকও ওই দলে ছিল। খেলা শেষে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের পুকুরে নেমে হাতমুখ ধুতে গিয়েছিল। পরে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে সব শিশুকে পুকুর থেকে তুলে দিয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে নিশান মল্লিক পুকুরে নেমেছিল কি না, সেটা তিনি বলতে পারেননি। তিনি বাড়িতে পৌঁছানোর পর বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা তাঁকে মুঠোফোনে জানান, নিশান মল্লিক পুকুরে নামার পর আর ওঠেনি। এই কথা জানার পর তিনি আবার বিদ্যালয়ে যান।
স্কুলের শ্রেণিকক্ষে নিশানের ব্যাগ পড়ে থাকার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, বন্ধ শ্রেণিকক্ষ থেকে নিশানের স্বজনেরা যে ব্যাগটি নিয়েছেন, সেটা ওই ক্লাসের সন্তু সর্দারের। সন্তু সর্দার প্রায় সময় ক্লাসে ব্যাগ রেখে চলে যেত বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু আহমদ বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে রেখে যাওয়া ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্রগুলো কার, সেটা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের তদারকি করা উচিত ছিল। সেটা না করে শ্রেণিকক্ষ বন্ধ করে চলে যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। সার্বিক বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।