পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকা থেকে ওমর ফারুক (২৪) নামের এক পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল) ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে মমিনপাড়া এলাকার ৭৫৩ নম্বর মেইন পিলারের ৮ নম্বর সাবপিলারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ধরে নিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তি পুলিশ সদস্য কি না এবং কী কারণে ওই এলাকায় তিনি গিয়েছিলেন, তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কনস্টেবল ওমর ফারুক পঞ্চগড় পুলিশ লাইনসে কর্মরত। তিনি পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের বিচারকদের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন বলে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আক্কাস আহমদ নিশ্চিত করেছেন। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর সীমান্ত এলাকার একটি বাজার থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ওমর ফারুকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান ওসি।
পুলিশ, বিজিবি ও ঘাগড়া সীমান্ত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ সদস্য ওমর ফারুকসহ তিনজন মমিনপাড়া এলাকায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে যান। এ সময় মমিনপাড়া এলাকার বিপরীতে ভারতের সিপাইপাড়া এলাকার ভারতীয় কয়েকজন নাগরিকের সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ভারতীয়রা ওমর ফারুককে মারধর শুরু করলে তাঁর সঙ্গে থাকার অপর দুজন পালিয়ে আসেন। ভারতীয়রা ওমর ফারুককে ধরে নিয়ে ভারতের চানাকিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেন।
ঘটনাস্থলের পাশের এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে ওমর ফারুকসহ তিনজন ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়ান। এ সময় তাঁরা একজন মাদক ব্যবসায়ীকে হাতকড়া পরাতে গেলে ভারতীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের ধাওয়া করে ওমর ফারুককে আটক করেন। এ সময় অন্য দুজন পালিয়ে যান। আটকের পর তাঁকে অনেক মারধর করা হয়েছে। পরে বিএসএফ সদস্যরা ওমর ফারুককে ধরে তাঁদের ক্যাম্পে নিয়ে যান।
গতকাল রাতে মমিনপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তিকে ভারতীয়রা ধরে বিএসএফের কাছে তুলে দিয়েছেন বলে জানান নীলফামারী ৫৬ বিজিবির ঘাগড়া সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নুরুল আমিন। তিনি আরও বলেন, রাতেই বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর নাম ওমর ফারুক বলে জানা গেছে। তবে তিনি পুলিশ সদস্য কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আজ সোমবার সকাল থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
আজ দুপুরে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। বিজিবির মাধ্যমে পুরো ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে। পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়ার পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।