পঞ্চগড় পৌরসভা নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে ১৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শীত উপেক্ষা করে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিতে সকাল থেকেই ভোটারদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে বেলা ১১টার দিকে পঞ্চগড় কালেক্টরেট আদর্শ শিক্ষা নিকেতন কেন্দ্রের সামনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলমগীরের গাড়ি ভাঙচুর করেছে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রবিউল ইসলাম নামের একজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে শহরের পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিটি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ ছাড়া নতুন বস্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, নুরুন আলা নুর কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্র এবং পঞ্চগড় উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে বিক্ষিপ্তভাবে ছোট ছোট পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ভোটারদের ভোট দিতে দেরি হওয়ার কারণে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও বেলা ১১টা পর্যন্ত অনেকেই ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা রামের ডাঙ্গা এলাকার জেসমিন আক্তার বলেন, ‘সকাল ৮টায় ছোট বাচ্চা নিয়ে ভোট দিতে এসেছি। ১১টা পর্যন্ত দিতে পারিনি। এখনো লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। একজন ভোটারের ভোট দিতে অনেক সময় লাগছে। এ জন্য লাইন শেষ হয় না।’
পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, প্রথমবার ইভিএমে ভোট হওয়ার কারণে ভোটারদের বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে। অনেকেই ভুল করার কারণে তাঁদের বারবার শেখাতে হচ্ছে। এ জন্য কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে বলে তাঁর দাবি।
পঞ্চগড় জেলা নির্বচন কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ চলছিল। বাইরে কিছুটা উত্তেজনা থাকলেও তা শান্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বেলা ১১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত তাঁর গাড়িতে হামলা চালিয়ে পেছনের কাচ ভেঙে দিয়েছে। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরসহ তিনজন মেয়র প্রার্থী এবং ৫৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৫টি কেন্দ্রের ৯৭টি কক্ষে ভোট গ্রহণ চলছে। মোট ভোটার সংখ্যা ৩৫ হাজার ১১ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ১৫৩ জন এবং নারী ভোটার ১৭ হাজার ৮৫৮ জন।