পঞ্চগড় পুলিশ লাইনসে কর্মরত একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি সম্প্রতি করোনা ‘পজিটিভ’ হওয়া পঞ্চগড় জেলা কারাগারের এক বন্দীর সংস্পর্শে এসেছিলেন। বুধবার রাতে পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন মো. ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১ মে রাতে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে ৫০ বছর বয়সী এক বন্দীর অ্যাজমার সমস্যা বেড়ে গেলে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে রাতেই তাঁকে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে তিনটার দিকে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশি পাহারায় তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
৩ মে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার ল্যাবে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৫ মে সন্ধ্যায় ওই বন্দীর নমুনা পরীক্ষার ফল করোনা ‘পজিটিভ’ আসে। এ ঘটনায় ওই বন্দীর সংস্পর্শে আসা কারাগারের চারজন কারারক্ষী, জেলা পুলিশের দুজন সদস্য, পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের একজন নার্স, একজন ওয়ার্ডবয়সহ মোট ১০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপর ওই বন্দীর সঙ্গে যাওয়া পুলিশের এএসআইসহ অপর একজন পুলিশ সদস্য পঞ্চগড় পুলিশ লাইনসে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।
জেলা পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, ১০ মে কোয়ারেন্টিনে থাকা দুই পুলিশ সদস্যসহ তাঁদের সংস্পর্শে আসা আরও এক পুলিশ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁদের তিনজনের মধ্যে ওই এএসআইয়ের করোনা পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, করোনা শনাক্ত হওয়া ওই পুলিশ সদস্য সুস্থ আছেন। তবে তাঁকে পুলিশ লাইনসে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় পুলিশ লাইনসে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, পঞ্চগড় জেলা থেকে বুধবার পর্যন্ত মোট ৬৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য রংপুর ও দিনাজপুরের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫১ জনের ফল পাওয়া গেছে। আবার এঁদের মধ্যে কারাবন্দী, পুলিশ সদস্যসহ মোট ১৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, করোনা ‘পজিটিভ’ আসা ওই এএসআইসহ দুই পুলিশ সদস্য সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়া এক কারাবন্দীকে নিয়ে রংপুর মেডিকেলে গিয়েছিলেন। এরপর থেকেই তাঁরা পুলিশ লাইনসে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। পরে পুলিশ লাইনস থেকে ওই এএসআইসহ তিন পুলিশ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।