উলুধ্বনির সঙ্গে বাজছিল শঙ্খ, ঢোল, মন্দিরা, কাড়া। দুধ-কলাসহ নানা ধরনের ফল নিয়ে কয়েক হাজার ভক্ত মন্দির প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছিলেন তিন মাসের জন্য কান্তজিউকে বিদায় জানাতে। ভক্তরা তাঁদের মনোবাসনা পূর্ণ করতে কান্তজিউকে দর্শন করে প্রসাদ দেন। এ অবস্থা ছিল আজ শুক্রবার সকালে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে।
প্রায় আড়াই শ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ও রাজপরিবারের প্রথা অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির থেকে কান্তজিউ বিগ্রহকে নৌপথে আনা হয় দিনাজপুর শহরের রাজবাটিতে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ভগবান বিষ্ণু ও নারায়ণের আরেক রূপ ভগবান কান্তজিউ।
প্রতিবছর ভাদ্র মাসের জন্মাষ্টমী তিথির দুই দিন আগে কান্তজিউ বিগ্রহ নেওয়া হয় রাজবাটিতে। তিন মাস সেখানে অবস্থান করার পর রাস পূর্ণিমার এক দিন আগে আবার রথে করে নেওয়া হয় কান্তনগর মন্দিরে।
এ রীতি অনুযায়ী শুক্রবার সকালে কান্তনগর মন্দির থেকে পূজা-অর্চনা শেষে পুরোহিতের কোলে করে কান্তজিউ বিগ্রহ নেওয়া হয় মন্দিরসংলগ্ন ঢেপা নদীর কান্তনগর ঘাটে। এ সময় কয়েক হাজার ভক্ত পায়ে হেঁটে নদীর পাড়ে বিদায় জানাতে আসেন কান্তজিউকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের সাংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপাল, রাজ দেবোত্তর এজেন্ট কমিটির রণজিৎ কুমার, শ্যামল কুমার ঘোষ প্রমুখ।
১০টি নৌকার নৌবহর নিয়ে রওনা করে কান্তজিউ বিগ্রহ। ২৫ কিলোমিটার নদীপথে রাজবাটিতে যাওয়ার সময় ৩০টি ঘাটে নৌকা ভেড়ানো হবে। ভক্তদের পূজা-অর্চনা গ্রহণ শেষে রাত ৯টায় নৌবহর দিনাজপুর শহরের সাধুর ঘাটে পৌঁছানোর কথা। সেখানে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী কান্তজিউকে গ্রহণ করবেন। পরে পালকিযোগে কান্তজিউ বিগ্রহ নেওয়া হবে রাজবাটিতে।