নোয়াখালীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক নারীসহ দুজন শ্বাসকষ্টের রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাঁদের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া একই রাতে জেলার সদর উপজেলার একটি গ্রামে এবং বেগমগঞ্জের চৌমুহনী শহরে জ্বর, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত আরও দুই ব্যক্তি মারা গেছেন।
এ নিয়ে গত দুই দিনে নোয়াখালীতে করোনার উপসর্গ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছয়জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে গতকাল সকাল শহরের সাতানিপুকুরপাড় এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা (৫০) ও চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া এলাকায় এক নারীর (৭০) মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল রাতে বাড়িতে মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া পরিবারের অসম্মতির কারণে জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে মারা যাওয়া দুই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। তাঁরা দুজনই হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাঁদের আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করার কিছু সময় পর তাঁরা মারা যান।
জেনারেল হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেনারেল হাসপাতালে মারা যাওয়া দুজনের একজন নারী। তাঁর বয়স আনুমানিক ৫০ বছর। তিনি জেলা শহরের সোনাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। গতকাল রাত দুইটার দিকে তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাঁকে আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর তিনি সেখানে মারা যান।
একই হাসপাতালে মারা যাওয়া অপর ব্যক্তির বাড়ি সদর উপজেলায়। তাঁর বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর। তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি হন রাত ১১টার দিকে। তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত দুইটার দিকে তাঁকে আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।
জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক নারীসহ দুজন গতকাল রাতে মারা গেছেন। দুজনেরই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় অন্য ওয়ার্ড থেকে আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছিল এবং কিছু সময় পরই তাঁরা মারা যান।
এক প্রশ্নের জবাবে তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আইসোলেশনে মারা গেলেও দুজনের কারোরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। পরিবারের সদস্যরা নমুনা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁদের আর নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।
অন্যদিকে, গতকাল রাতে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী শহরের এক বাসিন্দা জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে নিজ বাসায় মারা গেছেন। তাঁর বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। তবে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম কুমার দাশ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, পরিবারের কেউ স্বাস্থ্য বিভাগকে জানায়নি। তবু তিনি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করবেন।
একই রাত সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত এক ব্যক্তি (৫৩) বাড়িতে মারা গেছেন। তিনি কবিরহাট উপজেলায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। পরে খবর পেয়ে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন রাতেই গিয়ে বাড়ি থেকে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করেছেন।