নোয়াখালীতে বুরহান হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সাংবাদিকদের কালো পতাকা মিছিল

সাংবাদিক বুরহান হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবিতে সাংবাদিকদের কালো পতাকা মিছিল। আজ সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে
প্রথম আলো

তরুণ সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন ওরফে মুজাক্কিরের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে কালো পতাকা হাতে নোয়াখালী শহরের রাজপথে নেমেছেন সহকর্মী গণমাধ্যমকর্মীরা। আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত নোয়াখালী প্রেসক্লাবের ডাকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচিতে জেলা শহরে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকেরা অংশগ্রহণ করেন। এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ দেখে শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশে অগণিত মানুষ দাঁড়িয়ে যান।

আয়োজকদের সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক বুরহান হত্যার প্রতিবাদে কালো পতাকা মিছিলের এই কর্মসূচিকে সফল করতে সকাল থেকেই জেলা শহরে এবং বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের পদভারে ভরে যায় প্রেসক্লাব আঙিনা। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে ৪৫ ফুট দীর্ঘ একটি কালো পতাকা হাতে হাতে ধরে এবং প্রত্যেকে অন্য হাতে আরেকটি কালো পতাকা নিয়ে মৌন মিছিল বের করেন।

বুরহান উদ্দিন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার নোয়াখালী প্রতিনিধি ছিলেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব পালনকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

মিছিলটি শহরের জেলা জজ আদালতের সামনে দিয়ে টাউন হল মোড় হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে যায়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সময় অবস্থানের পর মিছিলটি পুনরায় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মৌন মিছিল শেষে প্রেসক্লাবের সহিদ উদ্দিন এস্কান্দার মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার সিকদার, সাবেক সহসভাপতি মনিরুজ্জামান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবুল হাসেম, আবু নাছের মঞ্জুসহ অনেকে বক্তব্য দেন।

বক্তারা সাংবাদিক বুরহানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধী আইনের আওতায় না আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা এ হত্যার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

বুরহান উদ্দিন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার নোয়াখালী প্রতিনিধি ছিলেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব পালনকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার অব্যাহত বিষোদ্‌গারের প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল।

মিছিলটি বিকেল পাঁচটায় বাজার-সংলগ্ন তাঁর বাড়ি থেকে বের হয়ে চাপরাশিরহাট মধ্যম বাজারে গেলে কাদের মির্জার অনুসারীরা মিছিলে হামলা চালান। এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলাকালে কর্তব্যরত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বুরহান। এ ঘটনায় ২৩ ফেব্রুয়ারি বুরহানের বাবা বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।