নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ সম্পাদক পদের দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহরের টাউন হল মোড়, সুধারাম থানার মোড় ও স্টেডিয়াম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭৫ জন আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরে পুলিশ দুই পক্ষকে দুই দিকে ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শহরের মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সম্মেলনের প্রথম পর্বে বক্তৃতা চলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল আটটার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খানের একদল সমর্থক মিছিল নিয়ে জজকোর্ট সড়ক থেকে শহরের আবদুল মালেক উকিল সড়কে ওঠেন। এ সময় একই সড়ক দিয়ে আরেক সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী যাওয়ায় তাঁর সমর্থকেরাও স্লোগান দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এর জের ধরে শহরের সুধারাম থানার মোড় ও স্টেডিয়াম এলাকায়ও দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষ সম্মেলন উপলক্ষে সড়কের পাশে টাঙানো একে অপরের ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলে। একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। ঘণ্টাখানেক ধরে চলা পাল্টাপাল্টি এ হামলা-সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭৫ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৭২ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জরুরি বিভাগের কর্মচারী মো. সেলিম নিশ্চিত করেছেন। তবে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেছেন, তিনি সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩৫ জনের ভর্তির তথ্য জানেন। পরে কতজন ভর্তি হয়েছেন, সে বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়ে জানাবেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সকালে পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে কিছু হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পাওয়ার পর পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সম্মেলনে জনদুর্ভোগ: সম্মেলনকে কেন্দ্র জেলা শহরের প্রধান সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বাসিন্দারা। বিশেষ করে প্রাক্-প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা এবং স্নাতক সম্মান শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। শিশুদের দীর্ঘপথ হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়।