ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় নরসিংহপুরে বাসের চাপায় পোশাক কারখানার কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসের চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শনিবার রাতে সাভারের জামতলা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের চালক ওয়াসিম ওরফে আল-আমিন (২৫) ও সহকারী মোহাম্মদ শাকিল (২৮)। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক ছিলেন।
র্যাব-৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার দিন চালক ওয়াসিম নেশাগ্রস্ত ছিলেন। তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আশুলিয়া ক্লাসিকের অপর একটি বাসকে ওভারটেক করার সময় চালকের সহকারী শাকিল মোটরসাইকেল আরোহী শামসুল আলমকে দেখেও না দেখার ভান করে চালককে সামনে এগিয়ে যেতে বলেন। এতে বাসের চাপায় শামসুল আলম নিহত হন।
র্যাব-৪ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার শারমিন গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শামসুল আলম (৪৫) কারখানার সামনে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে বাসের চাপায় নিহত হন। মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় ঢাকার দিক থেকে আসা আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাস রং সাইড দিয়ে গিয়ে তাঁকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে পাঁচটি বাসে আগুন দেওয়ার পাশপাশি ২০–২৫টি বাস ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁরা বাসের চালক ও সহকারীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে চালক ওয়াসিম ও সহকারী শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাসটির রুট পারমিট ছিল। ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত। তা ছাড়া ওই বছর ৩১ জানুয়ারির পর বাসটির ট্যাক্স ও টোকেন নবায়ন করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় র্যাব বাসের চালক ও সহকারীসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। ২০২০ সালের জুলাই মাসে একই পরিবহনের একটি বাসে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাসের চালক ও সহকারীসহ সাত জনকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসের ভেতর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, শামসুল আলম নিহতের ঘটনায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। র্যাব বাসের চালক ওয়াসিম ও সহকারী শাকিলকে আজ রোববার থানায় হস্তান্তরের পর তাঁদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।