নেত্রকোনা শহরের নাগড়া এলাকায় একটি ভবনের পাঁচতলার শোবার ঘর থেকে আবদুল কাইয়ুম সরদার (৩২) ও তাঁর দুই বছরের ছেলে আহনাব শাকিলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নেত্রকোনা মডেল থানা-পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে।
আবদুল কাইয়ুম সরদারের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার গোপালের খামার গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আক্কাস সরদারের ছেলে। তিনি নেত্রকোনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করতেন। শহরের নাগড়া এলাকার বাসায় স্ত্রী-সন্তানসহ বাস করতেন।
এলাকার কয়েক বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আবদুল কাইয়ুম সরদার ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ফকিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আসাদ আলীর মেয়ে ছালমা খাতুনকে (২১) বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে কাইয়ুম সরদার স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর কর্মস্থল নেত্রকোনায় বসবাস করছিলেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে তাঁদের ছেলের জন্ম হয়।
এক বছর ধরে নাগড়া এলাকায় রহুল আমিন নামের এক ব্যক্তির বাসার পাঁচতলায় একটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন কাইয়ুম সরদার। ভবনটির মালিক রহুল আমিনের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কাইয়ুম ও তাঁর দুই বছরের শিশুর মৃত্যুর খবর শুনে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে।
আবদুল কাইয়ুমের স্ত্রী ছালমা খাতুনের ভাষ্য, প্রতিদিনের মতো গতকাল বুধবার রাতে খাবার খেয়ে তাঁরা এক বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। আজ ভোর পাঁচটার দিকে জেগে উঠে পাশের কক্ষে একটি ফ্যানের সঙ্গে স্বামী ও সন্তানের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। পরে তিনি রশি কেটে লাশ দুটি নামিয়ে ফেলেন। এরপর বাসার দরজা খুলে বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন হোসাইন বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, সন্তানকে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলে আবদুল কাইয়ুম আত্মহত্যা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য বাবা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, ‘আমরা সব বিষয় মাথায় নিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করছি। থানা-পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম ইউনিট ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসেছেন।’