নীলফামারী জেলায় মাঘ মাসের হাড়কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। শীতের দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি শীত মৌসুমে জেলায় এটাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, এবার শীতে ১৩ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছিল। শুক্রবার হঠাৎ তাপমাত্রা নেমে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আসে। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৩ শতাংশ ও বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। কয়েক দিনের তুলনায় কুয়াশার ঘনত্ব কম থাকায় দৃষ্টিসীমা ছিল দেড় হাজার মিটার পর্যন্ত। জেলায় ২৬ জানুয়ারি ১২ দশমিক ৮ ও ২৭ জানুয়ারি ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লোকমান হাকিম বলেন, দুই থেকে তিন দিন নীলফামারী অঞ্চলে একই রকম তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে।
জেলায় হঠাৎ শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। সেচনির্ভর বোরো আবাদের ভরা মৌসুমে কৃষকেরা অনেক কষ্টে খেতে কাজ করছেন। শীতের তীব্রতায় গ্রামের হাটবাজারে ও শহরে লোকসমাগম কমে গেছে।
জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালন গ্রামের কৃষক তোফাজ্জাল হোসেন বলেন, ‘আইজকার ঠান্ডাত হামার অবস্থা খারাপ হয়া গেইছে। এই ঠান্ডাত ঘর থাকি বেড়ায় যায়ছে না।’
ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামে আগুন পোহাতে দেখা যায় নগেন চন্দ্র রায়কে (৬০)। তিনি বলেন, ‘আইজ যে ঠান্ডা পইড়ছে, খ্যাত-খামারে কাজ করা যায়ছে না। চাঁদর গাওত দিয়াও ঠান্ড কমে না। এই জন্য জাবুরা জঙ্গল জড়ে আগুন তাপেছি।’ একই গ্রামের সাল্টু বর্মণ (৮৫) ও তাঁর স্ত্রী সরুবালা (৮০) আগুন পোহাচ্ছিলেন। সাল্টু বর্মণ বলেন, ‘ঠান্ডায় কাহিল হয়া গেইছি। ঠান্ডা সহ্য করির পাইছি না।’
নীলফামারী জেলা শহরের রিকশাচালক সাহেব আলী বলেন, ‘শুক্রবার সকালে শহরে লোকজন কম সমাগম থাকলে বিকেলে সমাগম বাড়ে। আরও দুই-এক দিন এমন অবস্থা চললে আয়রোজগারের অভাবে সংসারে টান পড়বে।’