ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় নিশ্চিন্তপুর শিকদার বাজার (এসইএসডিপি) মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের চারতলা ভবনটি মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভবনটির প্রায় অর্ধেক নদীর মধ্যে ভেঙে পড়ে যায়। আজ বুধবার ভবনের আরও কিছু অংশ বিলীন হয়েছে। ভবনটি আগামীকাল নিলাম হওয়ার কথা।
বিদ্যালয়টি চর জহিরুদ্দীনে অবস্থিত। এ চরে দুটি ইউনিয়ন মলংচড়া ও সোনাপুর। এর মধ্যে বিদ্যালয়টি মলংচড়ায় পড়েছে। উচ্চ জোয়ার-জলোচ্ছ্বাস ও ঢলে এ বছর মলংচড়া ইউনিয়নের অর্ধেকসহ কয়েক শ কোটি টাকার অবকাঠামো, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। আরও তিন-চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙনের মুখে রয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তজুমদ্দিনের দুর্গম চর জহিরুদ্দীনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এসইএসডিপি)’ অর্থায়নে ২০১১ সালে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে এসইএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের চারতলা ভবনটি নির্মাণ করে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের গবেষণা কর্মকর্তা নুর ই আলম সিদ্দিক বলেন, যেসব অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না, সেসব অঞ্চলে সরকার কিছু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। এর অধীনে নিশ্চিন্তপুরে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে এমপিওভুক্ত করা হয়। প্রথম দিকে প্রকল্প থেকে এখানকার শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হতো। এখন রাজস্ব খাত থেকে দেওয়া হয়।
ভবনটি নিলামের জন্য ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর ‘স্পট কোটেশনে’ নিলাম ডাকার কথা। কিন্তু এর আগেই এটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।জাকির হোসেন, প্রধান শিক্ষক, নিশ্চিন্তপুর শিকদার বাজার (এসইএসডিপি) মডেল উচ্চবিদ্যালয়
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২১৬ শিক্ষার্থী আছে। জমির পরিমাণ ছিল তিন একর। ভাঙনে দুই একরের মতো জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভবনটি নিলামের জন্য ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর ‘স্পট কোটেশনে’ নিলাম ডাকার কথা। কিন্তু এর আগেই এটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটি ও মলংচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিমউদ্দীন বাবুল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কয়েক হাজার বালুভর্তি বস্তা ডাম্পিং করলে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু সেটা তারা করেনি। তাই কয়েক শ কোটি টাকার ভবন, সেতু, কালভার্ট, সড়ক, বাজার, মাছঘাটসহ হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে।
জানতে চাইলে পাউবো-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান মাহমুদ বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। চর জহিরুদ্দীনের উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে ভাঙছে। ভাঙনের তীব্রতা খুব বেশি। জরুরিভাবে এটা সংরক্ষণ সম্ভব নয়। টেকসইভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। তাতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা দরকার।