রায়পুরায় ঝড়ে নৌকাডুবি

নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার, এখনো পাওয়া যায়নি এক নারীকে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীতে ঝড়ের সময় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ থাকা দুজনের মধ্যে সুমাইয়া খাতুন (৫) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয় নৌ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। নৌকাডুবির ঘটনায় এখনো নিখোঁজ আছেন কমলা বেগম (৪৫) নামের এক নারী। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মির্জারচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল।

এর আগে গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার মির্জারচরে মেঘনা নদীতে হঠাৎ ঝড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নৌকাডুবির পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান ওই নৌকার যাত্রী ও মির্জারচর গ্রামের আক্তার মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল মিয়া (২৫)। তিনিসহ মোট সাতজন মিলে হাটে বাজারসদাই শেষে একটি ছোট নৌকায় বাড়ি ফিরছিলেন।
রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নের সমীবাদ গ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ওই নৌকার গন্তব্য ছিল একই উপজেলার মির্জারচর ইউনিয়নের মির্জারচর গ্রাম। সমীবাদ গ্রাম থেকে নদীপথে মির্জারচর গ্রামের দূরত্ব এক কিলোমিটারের কিছু কম। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে যেতে সময় লাগে পাঁচ মিনিটের মতো। তবে এদিন গন্তব্যের কাছাকাছি পৌঁছার পরই হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়লে নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে।

নৌ পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, সমীবাদ গ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নৌকাটিতে যাত্রী ছিলেন মোট সাতজন। মির্জারচর গ্রামে গন্তব্যের কাছাকাছি পৌঁছার পর হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় নৌকাটি। এ সময় পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকটি নৌকার যাত্রীরা ঝড়ের মধ্যেই তাঁদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন। ওই সময় পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও নৌকার যাত্রী কমলা বেগম ও শিশু সুমাইয়াকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান উদ্ধার হওয়া উজ্জ্বল। ডুবে যাওয়া ওই দুজনের মধ্যে সুমাইয়ার লাশ আজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো নিখোঁজ আছেন কমলা বেগম। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় নৌ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

শিশু সুমাইয়া তার নানিবাড়িতে বেড়াতে রায়পুরার চরমধুয়া ইউনিয়নের সমীবাদ গ্রামে গিয়েছিল। হাটফেরত লোকজনের সঙ্গে সেও দুর্ঘটনার শিকার নৌকাটিতে করে ফিরছিল। দুর্ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করা হলো।
জাফর ইকবাল, মির্জারচরের ইউপি চেয়ারম্যান

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায়পুরার বিভিন্ন চরাঞ্চলে একেক দিনে একেক স্থানে বাজার বসে। চরমধুয়ার সমীবাদ গ্রামটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার বসে প্রতি রোববার। এ হাটে কেনাবেচা করেন আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। গতকাল রোববার রাতে মির্জারচর ইউনিয়নের ওই সাত ব্যক্তি বাজার করা শেষে নৌকায় বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

মির্জারচরের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল জানান, শিশু সুমাইয়া তার নানিবাড়িতে বেড়াতে রায়পুরার চরমধুয়া ইউনিয়নের সমীবাদ গ্রামে গিয়েছিল। হাটফেরত লোকজনের সঙ্গে সেও দুর্ঘটনার শিকার নৌকাটিতে করে ফিরছিল। দুর্ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করা হলো। এই ঘটনায় নিখোঁজ কমলা বেগমকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নৌ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিস।