নারায়ণগঞ্জে হরতালের সমর্থনে বের করা মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা

বাম গণতান্ত্রিক জোটের হরতালের সমর্থনে করা মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। আজ সকাল ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

হরতালের সমর্থনে নারায়ণগঞ্জে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীদের বের করা মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকাল সাতটার দিকে শহরের চাষাঢ়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানোর তৎপরতা বন্ধের দাবিতে আজ সারা দেশে আধাবেলা হরতাল পালন করে বাম গণতান্ত্রিক জোট।

পুলিশের লাঠিপেটায় ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সমন্বয়ক নিখিল দাস। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি সুলতানা আক্তার, বাসদ ফতুল্লা ইউনিয়ন কমিটির সদস্য মোজাম্মেল হোসেন ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সদস্য সামিউল হক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সকাল পৌনে ছয়টার দিকে হরতালের সমর্থনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীরা শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় হরতাল–সমর্থনকারী ব্যক্তিরা সড়কে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। হরতালে দুপুর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখারও আহ্বান জানান তাঁরা। এ সময় চাষাঢ়া এলাকায় দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। পরে হরতাল–সমর্থনকারী ব্যক্তিরা চাষাঢ়া ও ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিলে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ এসে তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে। এতে বাম জোটের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

পরে সকাল পৌনে আটটার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে আবার মিছিল বের করেন হরতাল–সমর্থনকারী ব্যক্তিরা। সেখানেও পুলিশ বাধা দেয় এবং তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। মিছিলে বাধা দেওয়ায় ও লাঠিপেটা করার প্রতিবাদে পরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় সমাবেশ করেন। এতে বক্তব্য দেন জোটের জেলা সমন্বয়ক ও বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাস, জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের সদস্যসচিব আবু নাঈম, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আবু হাসান প্রমুখ।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে হরতালের তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। শহরের যানবাহন চলাচল ছিল প্রায় স্বাভাবিক। দোকানপাটও খোলা ছিল।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের জেলা সমন্বয়ক ও বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাস প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তাঁদের শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচিতে লাঠিপেটা করেছে। এ সময় পুলিশের হাতে ছিল বাঁশ। লাঠিপেটায় নারীসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজামান প্রথম আলোকে বলেন, হরতালে মিছিল করতে বাধা দেওয়া হয়নি। মিছিল থেকে দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। এ কারণে মৃদু লাঠিপেটা করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।