করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট নারায়ণগঞ্জে র্যাবের ৪২ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১–এর ব্যারাকের চারতলা এবং শহরের পুরাতন কোর্টে অবস্থিত ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশাল কোম্পানিতে দুটি আইসোলেশন সেন্টারে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৪ র্যাব সদস্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
র্যাব-১১–এর ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, র্যাবের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন সেন্টারে অক্সিজেন সিলিন্ডার, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, পোর্টেবল ইসিজি মেশিন, জরুরি রোগী বহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সসহ যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর তুলনায় নারায়ণগঞ্জে দুটি আইসোলেশনে হাসপাতালে শয্যা খুব কম। র্যাবের সদস্যদের সেখানে ভর্তি করা হলে শয্যাসংকট হতো। তাই র্যাবের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য ব্যাটালিয়নে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আক্রান্তদের অধিকাংশের করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই। নমুনা পরীক্ষায় তাঁদের করোনা পজেটিভ এসেছে। চিকিৎসাধীন র্যাবের সদস্যদের র্যাব-১১ সদর দপ্তরের মেডিকেল অফিসার, সিএমএইচ, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ও জেলা করোনাবিষয়ক ফোকাল পারসন চিকিৎসা বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁদের নির্দেশনায় র্যাবের সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা সুস্থ আছেন।
র্যাব কর্মকর্তা ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, আক্রান্তদের মনোবল যাতে ভেঙে না পড়ে, সে কারণে তাঁদের খবরের কাগজ পড়তে দেওয়া হচ্ছে, টেলিভিশনসহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা করোনাবিষয়ক ফোকাল পারসন এবং নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আক্রান্ত র্যাব সদস্যদের অধিকাংশের কোনো উপসর্গ নেই। তাঁদের র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলাকে চিহ্নিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ ১ হাজার ২৬ জন।