নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিয়েছেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইরে অবস্থিত বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজন এবং আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম নিহত ব্যক্তিদের জন্য বিচার পেতে সহায়তা এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন।
উপস্থিত কয়েকজন আহত ও নিহত ব্যক্তির স্বজনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। এর মধ্যে একজন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন। গত ১৮ জুলাই শহরের চাষাঢ়া এলাকায় আন্দোলনে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলিতে আহত হন তিনি। জোবায়ের বলেন, ‘আমার ডান কান অবশ হয়ে গেছে। তিন দফা অপারেশন করে গুলি বের করা হলেও এখনো মাথা ও শরীরের অনেক স্থানে গুলি রয়েছে।’
গার্মেন্টস শ্রমিক জুম্মান গত ৪ আগস্ট শহরের চানমারী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর শরীরে ১৮০টি ছররা গুলি লাগে। এর মধ্যে ২৫টি বের করা হলেও বাকিগুলো বের করা যায়নি। জুম্মান বলেন, ‘গুলির কারণে ব্যথায় রাতে ঘুমাতে পারি না। উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।’
৫ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মাবরুর হোসাইন রাব্বি। তিনি শহরের চাষাঢ়া বাগে জান্নাত মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর মা শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। সন্তান হারানোর ব্যথা কী, সেটা মা-বাবা ছাড়া কেউ বুঝবে না। আমার বাবা পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। এখন পুলিশ দেখলেই ভয় লাগে।’
নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজন ও আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার আগে সকালে সারজিস আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জের সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। পরবর্তী সময়ে নারায়ণগঞ্জের ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে তাঁরা মতবিনিময় সভা করেন।
বিকেলে শহরের পৌর স্টেডিয়াম ময়দানে গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন সারজিস আলমসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা।