নাটোরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মহিষভাঙ্গা এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ছয়জন এবং পরে একজনের মৃত্যু হয়।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় আহত মোহনা আক্তার (২৬) নামে এক যাত্রীকে বনপাড়ার আমেনা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মারা গেছেন। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের রুহুল আমীনের স্ত্রী। তাঁর মৃতদেহ হাইওয়ে থানায় নেওয়া হবে।
ঘটনাস্থলে নিহত ছয়জন হলেন নাটোর সদর উপজেলার পাইকরদোল গ্রামের শাজাহান আলীর মেয়ে সাদিয়া খাতুন (১২), ছেলে কাওছার আলী (১৮), একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৫০), টাঈাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বেঙ্গুনিয়া গ্রামের ভানু প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল জলিল (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের মশিউর রহমান (৩২) ও মাগুড়া সদরের মিজানুর রহমান (৩০)।
বড়াইগ্রামের হাইওয়ে থানা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে ন্যাশনাল পরিবহনের একটি বাস রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। আজ বেলা ১১টার দিকে বাসটি মহিষভাঙ্গা এলাকার গাজী অটোরাইস মিলের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিয়াম পরিবহনের বাসের সঙ্গে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সিয়াম পরিবহনের বাসটি ছিটকে গিয়ে রাইস মিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ন্যাশনাল পরিবহনের বাসটি মহাসড়কের পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সড়ক থেকে কিছুটা নেমে যায়।
দুর্ঘটনায় ন্যাশনাল পরিবহনের চার যাত্রী ও সিয়াম পরিবহনের দুই যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। উভয় বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। আহত হয়েছেন উভয় বাসের অন্তত ২৫ জন যাত্রী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানা, বড়াইগ্রাম থানা ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। আহত যাত্রীদের বনপাড়া, নাটোর ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ন্যাশনাল পরিবহনের ডি-৩ আসনের যাত্রী এনামুল হক বলেন, তিনি সিরাজগঞ্জের ফুড ভিলেজ রেস্তোরাঁ থেকে রাজশাহী যাওয়ার জন্য ওই বাসে ওঠেন। তাঁদের বাসটি গাজী অটোরাইস মিল অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে সেটির সংঘর্ষ হয়। মুহূর্তেই যাত্রীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যান। ঘটনাস্থলে তিনি ছয়জনের লাশ দেখতে পেয়েছেন। এ ছাড়া অনেক যাত্রীকে তিনি আহত অবস্থায় দেখেছেন। তিনি নিজেও কিছুটা আহত হয়েছেন বলে জানান।
এনামুল হক বলেন, ন্যাশনাল পরিবহনের ওই বাসে ১৬ জন যাত্রী ছিলেন। এদিকে ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, সিয়াম পরিবহনের বাসে প্রায় ৫০ যাত্রী ছিলেন।
ওসি মশিউর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে পুলিশ আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছে। দুর্ঘটনার পর কিছুক্ষণ ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। তবে এখন আবার যান চলাচল শুরু হয়েছে। সড়কে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।