বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার রেজু আমতলি সীমান্তের ওপারে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোরে পুলিশ মোহাম্মদ জাবের (১৩) নামের ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে। জাবের উখিয়ার লম্বাশিয়া শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা এমদাদ হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও বিজিবির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে নাইক্ষ্যংছড়িতে সীমান্তে এ পর্যন্ত ১৩টি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৪ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলি এলাকার ৪০ নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে আনুমানিক ১০০ গজ ভেতরে মিয়ানমারের ভূখণ্ডে স্থলমাইন বিস্ফোরণ ঘটে। রাত প্রায় তিনটায় ওই এলাকা দিয়ে কুতুপালং লম্বাশিয়া শরণার্থী শিবিরের চারজন রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ভেতর থেকে শিবিরে যাওয়ার জন্য আসছিলেন। স্থলমাইন বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে কিশোর মোহাম্মদ জাবের নিহত হয়েছে।
রেজু আমতলির বাসিন্দা ফরিদ আলম জানিয়েছেন, চারজন রোহিঙ্গা সীমান্তের ওপারে ওয়ালিডং পাহাড়ের ঝিরিতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে জাবের ও তার বড় ভাই ছিলেন। ফিরে আসার পথে মাইন বিস্ফোরণের ঘটে। এ সময় অন্য রোহিঙ্গারা পালিয়ে যান। জাবেরের লাশ তার বড় ভাই ভোরের দিকে সীমান্তের এপারে নিয়ে আসেন।
বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকালে কয়েকজন ব্যক্তি কাঁধে করে কাপড়ে মোড়ানো কিছু নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি সদস্যদের সন্দেহ হয়। তখন তল্লাশি চালিয়ে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখতে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে লাশ বহনকারী ব্যক্তিরা সীমান্তের ওপারে মাইন বিস্ফোরণে একজন নিহত হওয়ার কথা জানান। তাঁরা পুলিশকে সংবাদ দিলে তারা লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, বিজিবি থেকে সংবাদ পেয়ে তাঁরা রোহিঙ্গা কিশোর জাবেরের লাশ উদ্ধার করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।