নরসিংদীতে তিন দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তাঁত বোর্ডের বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ অবরোধ করা হয়। অবরোধকারীরা বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে স্থায়ী স্বতন্ত্র ক্যাম্পাস, সরাসরি বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিএসসি কার্যক্রম হস্তান্তর ও সেমিস্টার ফি মওকুফ করা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা তিনটার দিকে তিন দফা দাবি নিয়ে ইনস্টিটিউটটির কয়েক শ শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন যানবাহনের শত শত যাত্রী।
শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯৮০ সালে হস্তচালিত তাঁতশিল্প ও সরঞ্জামাদি উন্নয়ন কেন্দ্র নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তাঁত শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নামকরণ হয় এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি কোর্স চালু হয়। ২০১০ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কারিকুলাম অনুযায়ী ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু হয়। পরে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ সেশনে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু করা হয়। ২০১৯ সালে ক্লাস ও শিক্ষার অনুপযুক্ত পরিবেশ দেখে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেও কোনো সুরাহা পাননি, উল্টো লাঞ্ছনার শিকার হন।
স্বৈরাচার সরকার পতনের পর গত ১৯ আগস্ট থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল প্রতিষ্ঠানটিতে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস প্রশাসনসহ বিএসসি পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে তিন দফা দাবি নিয়ে আলোচনায় বসতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়নি। শেষ বিএসসি পরিচালনা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করেন শিক্ষার্থীরা। পাঁচ বছর ধরে সমস্যা সমাধানে কোনো সাড়া না পেয়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
জাহিদ হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তাতঁ বোর্ড শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধীনে ৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবার একটি মাত্র ক্যাম্পাস। আমরা পৃথক ক্যাম্পাস চাই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো আমাদের কাছে থেকেও সেমিস্টার ফি আদায় করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তাঁত বোর্ড শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বোঝালে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।