নবীনবরণে উৎসবমুখর পাবনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

নবীনবরণ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনের একটি দৃশ্য। রোববার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে
ছবি: হাসান মাহমুদ

জ্যৈষ্ঠের তপ্ত রোদ তখনো হানা দেয়নি। বৃষ্টির পর মিষ্টি আবহাওয়া। নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর পুরো ক্যাম্পাস। কেউ পাশের জনের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন, কেউবা কুশল বিনিময় করছেন। মুঠোফোনের ক্যামেরায় প্রথম দিনের স্মৃতিটা ধরে রাখছেন কেউ কেউ।

এর মধ্যেই ঘোষণা আসে অনুষ্ঠান শুরুর। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ, জাতীয় সংগীত, এরপর ফুল দিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

এমনই আবহে আজ রোববার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (১৩তম ব্যাচের) নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনাকাল ও ক্যাম্পাসের নানা জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন আয়োজন হলো। উৎসবমুখর আয়োজনে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে এল ক্যাম্পাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য হাফিজা খাতুন। সহ–উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল খানের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন খায়রুল আলম, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন মো. সাইফুল ইসলাম, মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মো. হাবিবুল্লাহ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন মো. কামরুজ্জামান, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রহ্ম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য হাফিজা খাতুন নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্বকে জয় করার জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে জ্ঞান অর্জন ও আহরণ করতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একটু একটু করে ভালো কাজ করে জমা করতে হবে এবং সেই জমানো ভালো কাজটিই একসময় বড় আকারে জীবনের ব্যাংকে জমা হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলাসহ অন্যান্য কার্যক্রম বাড়াতে হবে।

হাফিজা খাতুন আরও বলেন, জীবনে চলার জন্য শুধু নিজের দিকে না তাকিয়ে অন্যের চলার পথকেও পরিষ্কার করতে হবে। আলোকিত পথ বেছে নিতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে। মনের জোর, সততা ও একাগ্রতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই নিজে এগিয়ে যাওয়া যাবে, দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে।

সহ–উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল খান বলেন, একুশ শতকের বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্য অন্যতম মাধ্যম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিচর্চার মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যোগ্য ও সুনাগরিক তৈরি করতে হবে। তারুণ্যের শক্তি দিয়ে দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি বিভাগের ৯৮০ জন নবীন শিক্ষার্থী, তাঁদের অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা–কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা পর্ব শেষে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য। করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন নবীন ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।