বগুড়ায় হাসপাতাল থেকে ছয় দিনের এক নবজাতককে চুরি করে পালানোর সময় এক নারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা দেড়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। পরে মামলা হলে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার নারীর নাম ফাতেমাতুজ্জোহুরা শাওন (২৭)। তিনি বগুড়া শহরের চকফরিদ এলাকার মেয়ে। তাঁর স্বামীর নাম মোহাম্মদ আলী।
পুলিশ ও হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২১ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার দক্ষিণ জয়দেবপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা বেগম। সেদিনই এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন খাদিজা। কিন্তু প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণসহ অবস্থার অবনতি ঘটলে ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
খাদিজা বেগমের ভাই আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন তাঁর বোনকে নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। এ সময় নবজাতক ছিল গাইনি ওয়ার্ডে স্বজনের কাছে। এ সময় ফাতেমাতুজ্জোহুরা শাওন সেখানে ঘুরঘুর করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি শিশুকে কোলেও নেন। সুযোগ বুঝে শিশুটিকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আজিজ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটি গাইনি ওয়ার্ডে তার স্বজনদের কাছে ছিল। আটক ওই নারী শিশুটিকে বারবার কোলে নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আইসিইউতে গিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। পরে গাইনি ওয়ার্ড থেকে শিশুটিকে চুরি করে পালানোর চেষ্টা করেন। স্বজনদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ফাতেমাতুজ্জোহুরা শাওন নামের ওই নারীকে আটক করেন। পরে তাঁকে বগুড়া সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় নবজাতকের মামা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ দাবি করেন, ওই নবজাতক গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল না। মা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকায় বারান্দায় ওয়েটিং প্লেসে স্বজনদের কাছে ছিল নবজাতকটি। সেখান থেকেই নবজাতককে চুরি করে এক নারী পালানোর চেষ্টা করেন। পরে আনসার সদস্যরা ওই নারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।