ধুলাবালু রোধে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে সড়কে কয়েক দফা পানি ছিটানোর দাবি জানান নগরবাসী।
সিলেট নগরের মীরাবাজার এলাকায় মাইনুল মিয়া (৪২) শীতের পিঠা বিক্রি করেন। মূল সড়ক-সংলগ্ন ফুটপাতে তাঁর ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। তবে সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ায় সারাক্ষণ ধুলা ওড়ে। কয়েক মাস আগে সড়কের পাশে নালা নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে ধুলাবালি উড়ছে আরও বেশি। ধুলার কারণে ক্রেতারাও আগের মতো ভিড় করছে না।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, নগরের নাইওরপুল, মীরাবাজার, শিবগঞ্জ, সাদীপুর ও টিলাগড় দিয়ে যাওয়া সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এখন নালা নির্মাণের জন্য এসব এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি করায় ধুলাবালু বেশি উড়ছে। দিনরাত ধুলাচ্ছন্ন সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলছে যানবাহন ও মানুষজন। এ অবস্থায় ফুটপাতের ব্যবসায়ী ও স্থায়ী দোকানদারদের ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের আম্বরখানা, ইলেকট্রিক সাপ্লাই ও শাহি ঈদগাহ এলাকার ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট এবং হাওলাদারপাড়া, সোনারপাড়া, জল্লারপাড় ও উপশহর এলাকায় সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। এর বাইরে নগরের শেখঘাট, মহাজনপট্টি, সোবহানীঘাট, হুমায়ূন রশিদ চত্বর ও কদমতলী এলাকাতেও লোকজন ধুলায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব জানান, তাঁর বাসা নগরের যতরপুর এলাকায়। বাসা থেকে বেরিয়ে তাঁকে হয় সোবহানীঘাট দিয়ে নতুবা মীরাবাজার দিয়ে মূল শহরে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। যেদিক দিয়েই তিনি বের হন না কেন, তাঁকে বাসা থেকে বেরোলেই ধুলায় নাকাল হতে হয়।
নগরের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শীতের মৌসুমে এমনিতেই তুলনামূলকভাবে ধুলা বেশি ওড়ে। ভাঙা সড়ক দিয়ে দিনরাত সমানতালে যানবাহন চলাচল করায় ভোগান্তি আরও বাড়ে। এর মধ্যে চলছে উন্নয়নমূলক কাজ। এ অবস্থায় ধুলাবালু রোধে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা নিয়মিতভাবে সড়কে কয়েক দফা পানি ছিটিয়ে ধুলার উপদ্রব কমানোর দাবি জানান।
ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার বাসিন্দা মহি উদ্দিন বলেন, শীতের মৌসুমে নগরের সড়কজুড়ে কেবল ধুলার ওড়াউড়ি। মাস্ক পরা থাকা সত্ত্বেও নগরবাসীকে ধুলার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতে হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত ধুলার কারণে সড়কের আশপাশের বাসাবাড়ির দরজা-জানালাও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা বলেন, নগরে রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ ও ড্রেন নির্মাণের জন্য বর্তমানে ১৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব কাজের জন্য সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করতে হচ্ছে। ফলে অন্যবারের তুলনায় এবার ধুলাবালু তুলনামূলকভাবে বেশি উড়ছে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, উন্নয়নকাজের ঠিকাদারদের পানি ছিটানোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। এর বাইরে উন্নয়নমূলক কাজ ছাড়াও যেসব এলাকায় ধুলাবালি উড়ছে, সেখানেও সিটি করপোরেশনের নিজস্ব উদ্যোগে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা হবে।