বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মুঠোফোনে ধর্ষণের হুমকি পেয়ে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল সুমি আক্তার (১৬)। এক মাসের বেশি সময় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ওই কিশোরী মারা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়িতে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা শিউলী বেগম গতকাল রাতে বাবুগঞ্জ থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলায় রাকিব ফকির (৩০) নামের স্থানীয় এক যুবককে আসামি করা হয়েছে। রাকিব বাবুগঞ্জ উপজেলার ঠাকুরমল্লিক গ্রামের মৃত মোবারক ফকিরের ছেলে।
সুমি আক্তার একই উপজেলার জাহাপুর গ্রামের শওকত আলী ব্যাপারীর মেয়ে ও জাহাপুর দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি বিকেলে সুমিকে রাকিব ফকির মুঠোফোনে দলবদ্ধ ধর্ষণের হুমকি দেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর ক্ষোভে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় ওই কিশোরী। এতে সে গুরুতর দগ্ধ হয়েছিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাকিব সুমিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সুমি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে রাকিব তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন। পরে সুমির মা এ বিষয়ে রাকিবের পরিবারের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কোনো লাভ হয়নি। উল্টো রাকিব আরও ক্ষিপ্ত হন। সর্বশেষ গত ২১ জানুয়ারি সকালে সুমির মা রাকিবের বাড়িতে গিয়ে আবারও অভিযোগ জানিয়ে আসেন। এ সময় তিনি আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথাও বলেন। পরে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে মুঠোফোনে সুমিকে দলবদ্ধ ধর্ষণের হুমকি দেন। এরপর ক্ষোভে ওই দিন বিকেলে সুমি তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
শিউলী বেগম বলেন, বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে সুমিকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন। সেখানে সুমির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানেও সুমির অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে আর্থিক সংকটে চিকিৎসা করতে না পেরে তাঁরা কিছুদিন আগে সুমিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
জানতে চাইলে বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সুমির লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সুমির মা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি রাকিবকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।