ধরে নিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্যকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্ত এলাকা
ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) ওমর ফারুককে (২৪) ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আটকের ২২ ঘণ্টা পর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঘাগড়া সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক শেষে তাঁকে হস্তান্তর করা হয়।

পতাকা বৈঠকে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মামুন, পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, বিজিবির ঘাগড়া সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নুরুল আমিন, পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেন, ভারতের ২১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট জি এস টমারসহ বিজিবি ও বিএসএফের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকায় ৭৫৩ নম্বর মেইন পিলারের কাছে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে পুলিশ সদস্য ওমর ফারুককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। পরে বিজিবি ওই পুলিশ সদস্যকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে। এ সময় ওই পুলিশ সদস্যের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা গেছে।

ওমর ফারুক পঞ্চগড় পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। তিনি পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের বিচারকদের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকার ৭৫৩ নম্বর মেইন পিলারের ৮ নম্বর সাব পিলারের কাছ থেকে ভারতীয় নাগরিকেরা ওই পুলিশ সদস্যকে ধরে মারধর করেন। পরে তাঁকে ভারতের চানাকিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ঘাগড়া সীমান্ত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে আটটায় দিকে পুলিশ সদস্য ওমর ফারুকসহ তিনজন মমিনপাড়া এলাকায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে যান। এ সময় মমিনপাড়া এলাকার বিপরীতে ভারতের সিপাইপাড়া এলাকার ভারতীয় কয়েকজন নাগরিকের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ভারতীয়রা ওমর ফারুককে ধরে মারধর শুরু করলে তাঁর সঙ্গে থাকার অপর দুই ব্যক্তি পালিয়ে আসেন। পরে ভারতীয়রা ফারুককে ধরে নিয়ে ভারতের চানাকিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেন। এ ছাড়া ঘটনার পর ওই সীমান্ত এলাকার টেনশন মার্কেট নামের একটি বাজার থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ওমর ফারুকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেন সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বিএসএফের হাতে আটক হওয়া ওমর ফারুক জেলা পুলিশের একজন সদস্য। সন্ধ্যার পর তাঁকে হাতে পেয়েছেন। তিনি আহত থাকায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি কী কারণে ওই সীমান্তে গিয়েছিলেন, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত করা হচ্ছে। চিকিৎসা প্রদানের পর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।