শাল্লায় র‍্যাবের মহাপরিচালক

দোষীদের কঠোর শাস্তি হবে, যাতে কেউ এমন করার সাহস না পায়

হামলার শিকার সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
প্রথম আলো

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত কেউ রেহাই পাবে না। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আগামীতে যাতে এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস কেউ না পায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন নোয়াগাঁও যান। তিনি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ঘুরে দেখেন। পরে নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমবেত লোকজনের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

র‍্যাবপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ কারও একার নয়। এটা হিন্দু-মুসলিম সবার। সবাই এখানে মিলেমিশে থাকবেন। এ গ্রামের বাসিন্দারা নিশ্চিতে এখানে বসবাস করবেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি ধর্মীয় সংকীর্ণতায় ভুগি, তাহলে দেশ এগোবে না। এখানে যুগ যুগ ধরে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বাস করছেন। আমরা যেভাবে এখানে ছোটবেলা থেকে মিলেমিলে বাস করছি, ভবিষ্যতেও থাকব। যাদের ভেতরে ধর্মীয় সংকীর্ণতা আছে, সেগুলো বাদ দিতে হবে। উদার হতে হবে।’ যাদের ক্ষতি হয়েছে, তাদের প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে বলে তিনি জানান। নিজেকে এ এলাকার সন্তান দাবি করে তিনি বলেন, ‘এলাকার সন্তান হিসেবে, এ মাটির সন্তান হিসেবে আমার দায় আছে। আমি সব সময় খোঁজ রাখব। এলাকার পরিস্থিতি সব সময় আমাদের নজরে থাকবে।’

র‍্যাবপ্রধানের বাড়ি শাল্লা উপজেলার শাল্লা ইউনিয়নের শ্রীহাইল গ্রামে। তিনি সকালে হেলিকপ্টারে করে এখানে আসেন। নোয়াগাঁও গ্রাম পরিদর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, শাল্লা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন চৌধুরী), শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মুক্তাদীর হোসেন প্রমুখ।

পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দিরাই উপজেলা শহরে আয়োজিত এক সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জুনাঈদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্য দেন। মামুনুল হককে নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের যুবক ঝুমন দাস (২৮) ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেন অভিযোগে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে গত মঙ্গলবার রাতে নোয়াগাঁও গ্রামের লোকজন তাঁকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। পরে গতকাল বুধবার সকালে শাল্লা উপজেলার কাশিপুর, দিরাই উপজেলার নাসনি, সন্তোষপুর ও চন্দ্রপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ লাটিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে যান। সেখান থেকে শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালান।