‘দেশে গণতন্ত্র না থাকার সুযোগে ওই ধরনের হামলা হচ্ছে। কুমিল্লায় যা ঘটেছে, উচিত ছিল আমাদের সবারই সেখানে ছুটে যাওয়া। পুরোহিত–আলেম সবাইকে নিয়ে বসা। তাহলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। আসলে আমরা অর্থহীন লেখাপড়া করেছি।’
আজ বুধবার বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামে উত্তেজিত জনতার দেওয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বড়করিমপুর এলাকা পরিদর্শনে এসে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। এ সময় এলাকায় টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে তিনি স্থানীয় একটি হরিবাসর মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে সেখানে তিনি এ বিষয়ে নানা বক্তব্য দেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মাঝিপাড়ায় যা ঘটেছে, তা দেখলাম। টিনের পোড়া বাড়িগুলোর দিকে তাকানো যায় না। এ ধরনের ঘটনা কখনো ঘটে নাই। মনে হচ্ছে, আমরা মানুষ আর নাই। সবাই অমানুষ হয়ে গেছি। অমানবিক হয়ে গেছি। এদের (নির্যাতিতদের) যে চেহারা হয়েছে, মহিলাদের দিকে তাকাতে পারছিলাম না আমি। এই জন্য কি এই দেশ সৃষ্টি করেছি আমরা!’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, আপনারা অনেকে দেখেন নাই। আমার মনে হয়, এই জাতীয় ঘটনা কখনো ঘটে নাই। যা মাঝিপাড়ায় ঘটেছে।’ ‘তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতা, সর্বোপরি আমাদের সবার ব্যর্থতায় এমন ঘটনা ঘটেছে।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান করছি, আপনি মা। স্বচোখে এখানে এসে আপনি ঘটনা দেখেন। আপনাকে দেখলে এদের দুঃখ–কষ্ট অর্ধেক কমে যাবে। তারা শান্তি পাবে। পুলিশেরও সাহস বাড়বে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘খালি ওয়াজ মাহফিল করে উল্টাপাল্টা বলে লাভ হবে না। খালি বলবেন শাস্তি দিবেন, কেউ রেহাই পাবে না; তা হবে না।’
বক্তব্যের শেষে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ছোট সংগঠন। আমরা এখানে ট্রাকে করে খাবার নিয়ে এসেছি। এ খাবার এক মাস চলবে। আমরা সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে আছি, থাকব।’
ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার একটি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে উত্তেজিত জনতা গত রোববার রাতে তাণ্ডব চালায়।