৫০ বছর ধরে ৫৫টি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ সম্মিলনীর স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘কারিতাস বাংলাদেশ’। এই সময়ে তাঁরা গৃহহীনদের জন্য সাড়ে ৪৪ লাখ ঘর নির্মাণ করেছে। বর্তমানে দেশব্যাপী চলমান ১১২টি প্রকল্পে কারিতাসের সুফলভোগী প্রায় ১৭ লাখ মানুষ। প্রতিষ্ঠানটির সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
আজ বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন কারিতাস বাংলাদেশের পরিচালক (কর্মসূচি) জেমস গোমেজ। তিনি বলেন, বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সমতাভিত্তিক, ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সমর্থন লাভ এবং তাঁদের সেবায় উদ্বুদ্ধ করা তাঁদের উদ্দেশ্য। তাঁদের চাওয়া দরিদ্রের সেবা ও প্রতিবেশীকে ভালোবাসায় নতুন প্রজন্ম উৎসাহী হোক।
জেমস গোমেজ আরও বলেন, ’৭০–এর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ত্রাণসহায়তা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সংস্থাটির জন্ম। তবে তখন কারিতাস নাম ছিল না। বিগত ৫০ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন, ক্ষমতায়ন, আদিবাসীদের উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে কারিতাস কাজ করেছে। ঢাকার প্রধান কার্যালয় ছাড়াও আটটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে দেশের ৫৩টি জেলায় ১৮৭টি উপজেলায় কাজ করছে সংস্থাটি।
পাশাপাশি ১০টি ট্রেনিং সেন্টার, ২৪৬টি সাইক্লোন সেন্টার, ১১টি টেকনিক্যাল স্কুল, ৩২টি যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ নিরাময় কেন্দ্র, ২টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র, ৯টি মাদকাসক্ত-সেক্স ওয়ার্কার-পথশিশু ও নির্যাতনবিরোধী সহায়তা কেন্দ্র এবং ৩৮টি ডে কেয়ার ও হোম কেয়ার কেন্দ্র পরিচালনা করে কারিতাস বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে কারিতাস বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বিশপ জেমস রমেন বৈরাগী বলেন, সারা দেশে অনগ্রসর, পিছিয়ে পড়া দুস্থ, অসহায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে কারিতাস। তিনি বলেন, ‘অতীতের মতো সম্মিলিতভাবে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে আরও কাজ করে যেতে চাই আমরা।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কারিতাস বাংলাদেশ–এর পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) যোয়াকিম গোমেজ, আঞ্চলিক পরিচালক সুক্লেশ জর্জ কস্তা, কমিউনিকেশন ম্যানেজার শিবা মেরী ডি রোজারিও, আঞ্চলিক পরিচালক রিমি সুবাস দাস প্রমুখ।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামে কারিতাসের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন হবে। এরপর ঢাকা, রাজশাহী, সিলেটসহ সারা দেশে পর্যায়ক্রমে সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান হবে। এর মধ্যে রয়েছে শোভাযাত্রা, বৃক্ষরোপণ, ফটোগ্যালারি উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।