বগুড়া শহরের নামাজগড় গোরস্থান সড়কে একটি তিনতলা বাসার নিচতলায় আয়ুর্বেদিক কারখানার সাইনবোর্ড টাঙানো আছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় আছে অনুমোদনহীন পানির কারখানা। সেখানে রাতের বেলায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পাম্প থেকে পানি তুলে জারে ভরে বাজারজাত করা হচ্ছিল।
বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির (ড্রিংকিং ওয়াটার) নামে এ প্রতারণা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ‘মেসার্স আত্মা ফ্রেশ ড্রিংকিং ওয়াটার’ নামের কারখানাটিতে অভিযান চালান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কর্মকর্তারা।
অনুমোদন ছাড়াই অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে অবৈধভাবে খাওয়ার পানি বাজারজাত করায় অভিযানে পানিসহ বেশ কিছু অবৈধ জার জব্দ করা হয়। বিএসটিআই আইনে মামলা করা হয় কারখানার অন্যতম অংশীদার ইব্রাহীম হোসেনের বিরুদ্ধে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিএসটিআই বগুড়া জেলার পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ ও সহকারী পরিচালক জুলফিকার আলী।
বিএসটিআই বগুড়া জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিএসটিআইয়ের সনদ ছাড়াই কথিত ওই কারখানায় রাতের বেলা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জারে পানি ভরে মোড়ক লাগিয়ে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছিল। দিনের বেলা ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে রেখে রাতের বেলা পানির এ অবৈধ কারবার চলছিল। কারখানার পানি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের কোনো লাইসেন্স না থাকায় মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
বিএসটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বগুড়ায় জারে বিশুদ্ধ পানি বাজারজাতকারী কারখানা আছে ১০টি। এর মধ্যে জমজম ড্রিংকিং ওয়াটার, আত্মা ফ্রেশ ডিংকিং ওয়াটার, জাগো ব্রতি (অসমো ব্র্যান্ড) ডিংকিং ওয়াটার, সোনাতলার ছালেক ফুড কারখানা ও শিউলী ড্রিংকিং ওয়াটারের বিএসটিআই সনদ নেই। বিএসটিআইয়ের সনদ প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে পদ্মা ড্রিংকিং ওয়াটারের। এ ছাড়া সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে অ্যাকুয়া ক্লিন, মম ইন ড্রিংকিং ওয়াটার, শাজাহানপুর উপজেলার রোদসী ট্রেডার্সের মুসাফির ডিংকিং ওয়াটার এবং আরডিএর পল্লী ড্রিংকিং ওয়াটার।
বিএসটিআইয়ের পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া অস্বাস্থ্যকর পানি জারে ভারে বাজারজাত করায় এখন পর্যন্ত সাতটি মামলা করা হয়েছে।