পুলিশের বর্তমান ও সাবেক ১৬ জন সদস্য, সোনালী ব্যাংকের ১ জন, হিসাবরক্ষণ অফিসের ৮ জনসহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাগুরায় সরকারি তহবিল থেকে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় আট মাস অনুসন্ধান শেষে গতকাল সোমবার মাগুরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি করেন দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল।
মামলায় পুলিশের বর্তমান ও সাবেক ১৬ জন সদস্য, সোনালী ব্যাংকের ১ জন, হিসাবরক্ষণ অফিসের ৮ জনসহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। ২০১৭–২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশের সাধারণ ভবিষ্য তহবিল (জিপিএফ) ও নিরাপত্তা জামানত (ডিপোজিট অ্যাগেইনস্ট ওয়ার্কস অ্যান্ড সাপ্লাই) অ্যাকাউন্ট থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০ কোটি ৪৪ লাখ ১ হাজার ৩৪৮ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে মাগুরার সাবেক তিনজন জেলা হিসাবরক্ষণ ও ফিন্যান্স কর্মকর্তা রয়েছেন। তাঁরা হলেন জি এম জিল্লুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও সরকার রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া আজমল হোসেন, আবদুল লতিফ মিয়াসহ মাগুরা হিসাবরক্ষণ অফিসের পাঁচজন নিরীক্ষককে (অডিটর) আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৬ জন অবসরপ্রাপ্ত সদস্যসহ পুলিশের ১৬ জন সদস্যের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কনস্টেবল গাজী মসিউর রহমান, ফিরোজ হোসেন ও শিপন মৃধা। অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক। ওয়াজেদ আলী নামের ওই ব্যক্তি বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ঝিনাইদহ শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। এর বাইরে নড়াইলের লোহাগাড়া উপজেলার মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের আজমল মুন্সী ও মাগুরা সদর উপজেলার সাজিয়াড়া গ্রামের শাহাদাৎ হোসেনের মেয়ে রোকাইয়া ইয়াসমিনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এই দুজনের নামের হিসাবের মাধ্যমেই পাঁচ কোটি টাকার বেশি উত্তোলন করা হয়েছে।
মাগুরা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নজরে আসার পর অভ্যন্তরীণ তদন্তে আটজন পুলিশ সদস্যের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইতিমধ্যে তাঁদের বরখাস্ত করা হয়েছে। আর তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে।