দুই বছর পরও উদ্বোধন হয়নি স্মৃতিসৌধটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিটঘর গ্রামে গণহত্যার স্থানে নির্মিত সৌধটি দুই বছর পরও উদ্বোধন করা হয়নি
  ছবি: প্রথম আলো

আজ রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিটঘর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা বিটঘর গ্রামে ৮০ জনকে নির্যাতন করে হত্যা করে।

এদিকে বিটঘর গণহত্যা স্মরণে দুই বছর আগে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। সেটি এখনো উদ্বোধন করা হয়নি।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১৯৭১ সালে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের আনাগোনা বেশি ছিল। মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাশেদ বলেন, ৩১ অক্টোবর দুই শতাধিক পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসররা বিটঘর গ্রামে আক্রমণ চালায়। তারা ৮০ জনকে হত্যা করে। পরে লাশগুলো বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বিটঘর ছোটখালে ফেলে দেয়। রাজাকাররা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে গ্রামের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, যে স্থানে ৮০ জনকে একত্র করে হত্যা করা হয়, সেই ভূমির মালিক ছিলেন শহীদ শামসুল হক। দুই সন্তান নিয়ে অতিকষ্টে দিনযাপন করেছেন তাঁর স্ত্রী মালেকা খাতুন। পরে ২০০৪ সালে মালেকা খাতুন ওই ১৫ শতক ভূমি বিটঘর বধ্যভূমির নামে লিখে দেন।

পরে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানের প্রচেষ্টায় ২০১৯ সালে ওই স্থানে ‘বিটঘর গণহত্যায় শহীদ স্মৃতিসৌধ’ গড়ে তোলা হয়। সেখানে ৮০ জন শহীদদের নামসংযুক্ত আটটি ফলক নির্মাণ করা হয়। উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০২০ সালে কয়েকবার উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করে তা বাতিল করা হয়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইসমত আলী ও সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন বলেন, তাঁরা চান বিটঘর বধ্যভূমি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হবেন জেলা প্রশাসক। আর উদ্বোধন করবেন জমিদাতা শহীদজায়া মালেকা খাতুন। নাহলে তাঁরা অনুষ্ঠান বর্জন করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, বিটঘর গণহত্যা দিবস পালনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ যথাযথভাবে দিবসটি পালন করা হবে।