প্রায় চার বছর ধরে সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে। সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ কিংবা সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে দুই পাশে কাঠ বিছিয়ে চলছে সেতু পারাপার।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার জিগা গ্রামের নানানদহ খালের চিত্র এটি। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশ ভেঙে কাত হয়ে আছে। দুই পাশের ভাঙা অংশে বাঁশের খুঁটির ওপর কাঠ বিছিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে নানানদহ খালের ওপর ৫০ ফুটের দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের আগস্টের বন্যায় ওই সেতুর দুই পাশ দেবে গিয়ে ভেঙে যায়।
আঞ্জুরা বেগম নামের স্থানীয় এক নারী জানান, চার বছর ধরে সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে। সেতুর জন্য কতজনকে বলা হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কয়েক দিন আগে গ্রামবাসী নিজেরা চাঁদা তুলে কাঠ বিছিয়ে জোড়াতালি দিয়েছে। কিন্তু সেতুতে উঠলেই সেতুটি নড়েচড়ে ওঠে। কয়েকজন পানিতে পড়েও গিয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেতুর এক পাশে মাগুড়া, বহুতি, জিগা ও মুলকান গ্রাম। এই চার গ্রামের মানুষ চৌরঙ্গী বাজার, কাঁঠালডাঙ্গী বাজার ও যাদুরনিহাটে যাওয়ার জন্য এ সেতু ব্যবহার করে।
মাগুড়া গ্রামের আবদুল হাকিম জানান, আশপাশের চার গ্রামের মানুষ এ সেতু দিয়ে পণ্য পরিবহন করত। কিন্তু সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় গ্রাম থেকে শহরে ধান, চাল ও কৃষিপণ্য যানবাহনে পরিবহন করা যাচ্ছে না।
আবদুল তোহাব জানান, দুই পাশের হাটে মালামাল নিয়ে যেতে হলে কমপক্ষে চার কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। অসুস্থ ব্যক্তি ও রোগীদের হাসপাতালে যেতেও অনেক সমস্যা হয়।
এ বিষয়ে ভাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান প্রথম আলোকে জানান, সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করা খুবই জরুরি। বিষয়টি নিয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলবেন।
এখানে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য তদবির করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন একটি সেতুর কাজ শুরু হবে।জিয়াউল হাসান, চেয়ারম্যান, হরিপুর উপজেলা পরিষদ
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হরিপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান বলেন, ‘আমি সবে হরিপুর উপজেলায় বদলি হয়ে এসেছি। সেতুর বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।’
হরিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান জানান, এখানে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য তদবির করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন একটি সেতুর কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।