ধানের জমিতে সেচের পানি না পাওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘটু গ্রামের দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামি সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার ১১ দিন পর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
সাখাওয়াত হোসেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) পরিচালিত ঈশ্বরীপুর-২ গভীর নলকূপের অপারেটর। তাঁর বাড়ি ঈশ্বরীপুর গ্রামে। এই গভীর নলকূপ থেকেই পাশের সাঁওতাল অধ্যুষিত নিমঘটু গ্রামের কৃষকদের জমিতে সেচ দেওয়া হয়।
ঘটনার দিন সাখাওয়াত হোসেন পুলিশের সামনেই ছিলেন। তখন বিষপানে মৃত অভিনাথ মারানডি ও রবি মারানডি পরিবারের পক্ষ থেকে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে পানি না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়। তারপরও পুলিশ সাদা কাগজে কৃষক অভিনাথের স্ত্রীর সই নিয়ে অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করে। পরের দিন অভিনাথের স্ত্রী থানায় গিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, সাখাওয়াতের বাড়ি গোদাগাড়ী থানার প্রেমতলী তদন্ত ফাঁড়ির অধীনে। ফাঁড়ির পুলিশ গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সাখাওয়াতকে গোদাগাড়ী উপজেলার কদমশহর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। আজ রোববার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
গত ২৩ মার্চ গোদাগাড়ীর নিমঘটু গ্রামে সঠিক সময়ে ধানের জমিতে পানি না পেয়ে কৃষক অভিনাথ মারানডি ও রবি মারানডি বিষপানে আত্মহত্যা করেন বলে তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। পরে এ ঘটনায় নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম।
কৃষকদের মৃত্যু এবং সময়মতো পানি না পাওয়ার কারণ জানতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে গোদাগাড়ীর নিমঘটু ও ঈশ্বরীপুর গ্রাম পরিদর্শন করে স্থানীয়দের বক্তব্য নিয়েছেন। আসামিকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও জাতীয় কৃষক সমিতি রাজশাহীতে মানববন্ধন করেছে। এর আগেও একই দাবিতে একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়েছে।