ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই আনা সোনার কানের দুলের জন্য কাশফিয়া আক্তার নামের আট বছরের শিশুকে হত্যার দায় স্বীকার করে দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় তাঁরা এ জবানবন্দি দেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কাশফিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নোয়াহাটি গ্রামের আবদুল কাদেরের মেয়ে। নোয়াহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল সে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সে নিখোঁজ হয়। পুলিশ গতকাল বুধবার সকাল নয়টার দিকে গ্রামের একটি বাড়ির পাশে রাখা লাকড়ির স্তূপের নিচ থেকে কাশফিয়ার লাশ উদ্ধার করে। নিহত শিশুর বাবা আবদুল কাদের বাদী হয়ে গতকাল রাত ১২টার দিকে একই গ্রামের রিমি আক্তার (২২), হোসেন মিয়া (২০) ও জামির মিয়াকে (১৮) আসামি করে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এর আগে পুলিশ ওই তিনজনকে গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে।
গতকাল রিমি আক্তারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সরাইল বৈকাল বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুশান্ত দত্তকে (২২) আটক করে। এ সময় সুশান্ত দত্তের দোকান থেকে পুলিশ কাশফিয়ার কানের দুই আনার সোনার দুল উদ্ধার করে।
গতকাল রিমি আক্তারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সরাইল বৈকাল বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুশান্ত দত্তকে (২২) আটক করে। এ সময় সুশান্ত দত্তের দোকান থেকে পুলিশ কাশফিয়ার কানের দুই আনার সোনার দুল উদ্ধার করে। সুশান্ত দত্ত পুলিশের কাছে বলেন, তিনি কানের দুল দুটি গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে রিমির কাছ থেকে চার হাজার টাকায় কিনেছেন।
পুলিশ আজ দুপুরে কাশফিয়া হত্যা মামলার আসামি হিসেবে রিমি আক্তার, হোসেন মিয়া ও জামির মিয়াকে এবং চোরাই পণ্য নিজ জিম্মায় রাখার অভিযোগে সুশান্ত দত্তকে আদালতে সোপর্দ করে। আজ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ হোসাইনের আদালতে রিমি আক্তার ও হোসেন মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কাশফিয়া হত্যার ঘটনায় তিনজনকে হত্যা মামলার আসামি আর স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে চোরাই পণ্য রাখার অভিযোগে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে তাঁদের চারজনকেই জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন হত্যার ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।