নাটোরের উত্তরা গণভবন তথা দিঘাপতিয়ার রাজবাড়ি আজ সোমবার বেলা ১১টায় দর্শনার্থীদের জন্য শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে। এর পরপরই দর্শনার্থীরা টিকিট কেটে দলে দলে গণভবনের ভেতর ঢুকতে শুরু করেন। এ সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিষ্টি বিতরণ করে দর্শনার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়।
করোনা মহামারির কারণে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্তে গত মার্চে উত্তরা গণভবন দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। মন্ত্রী পরিষদ সচিবের মৌখিক নির্দেশে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে গণভবনে গিয়ে প্রধান ফটকে টাঙানো ‘বন্ধের নোটিশ’ নামিয়ে দেন এবং দর্শনার্থীদের জন্য প্রধান ফটক উন্মুক্ত করেন। তবে দর্শনার্থীদের মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে নাটোরের দিঘাপতিয়ায় উত্তরা গণভবনে সরেজমিনে দেখা যায়, নানা বয়সের দর্শনার্থীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতরে ঢোকার টিকিট কিনছেন। জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা গণভবন বন্ধের নোটিশটি খুলে দিয়ে প্রধান ফটক উন্মোচন করা মাত্রই দর্শনার্থীরা দল বেঁধে গণভবনের ভেতর ঢুকতে শুরু করেন। দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাস বিরতির পর দিঘাপতিয়া রাজার ঐতিহাসিক রাজবাড়িতে ঢুকতে পেরে দর্শনার্থীরা আনন্দ-উল্লাস করতে থাকেন। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের রাজবাড়ির ভেতরে ঘুরতে দেখা যায়।
ঝিনাইদহ থেকে আসা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি নাটোরে বেড়াতে এসেছেন। উত্তরা গণভবন বন্ধ রয়েছে, এমনটা জানার পরও তাঁরা শুধু বাইরে থেকে দেখার জন্য এখানে এসেছিলেন। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আজই গণভবন দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ায় তাঁরা ভেতরের সবকিছু দেখতে পারছেন। এ ঘটনা তাঁদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানান ওই শিক্ষক।
জেলা প্রশাসক মো.শাহরিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ দীর্ঘদিন বেড়ানোর সুযোগ না পেয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। বন্ধ থাকা অবস্থায় প্রতিদিন অনেকে এসে আমার কাছে ভেতরে ঢোকার অনুমতি চাচ্ছিলেন। বিষয়টি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে জানালে তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে উত্তরা গণভবন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করার অনুমতি দেন। তাঁর অনুমতিক্রমে গণভবন খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রধান ফটকে নিরাপত্তাকর্মীরা দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।’