দাম বেড়ে শুঁটকিও নাগালের বাইরে

প্রায় ১৫ ধরনের শুঁটকির দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মাছের দামও বাড়তি।

চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেটের কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী আবদুস সালাম সাত দিন আগে চিংড়ি শুঁটকি বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্রি করেন ১ হাজার ৮০০ টাকায়। আবদুস সালাম জানালেন, তাঁর দোকানে ২৫ রকমের শুঁটকি রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ ধরনের শুঁটকির দামই কেজিতে ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

আবদুস সালামের দোকানের নাম শাহ মোহছেন আউলিয়া ট্রেডার্স। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে কথা হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব এই ব্যবসায়ী বলেন, বৃষ্টির কারণে শুঁটকি তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটেছে। এ কারণে চট্টগ্রাম নগরের বাজারে শুঁটকি আসছে কম। তাই দাম বেড়েছে।

বাজারে ছুরি শুঁটকির দাম পড়ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রুপচাঁদার দাম। এক সপ্তাহ আগে ভালো মানের রুপচাঁদা শুঁটকি ছিল ৩ হাজার টাকা কেজি। গতকাল বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। ৫০ টাকা বেড়ে লইট্টা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, পোপা কেজি পড়ছে ৮০০ টাকা। সাত দিন আগে ছিল ৭৫০। ফাইস্যা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৭০০ টাকা। আগে ছিল ৩৫০-৬৫০ টাকা।

গতকাল কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে শুঁটকি কিনছিলেন রওফুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাসায় প্রায় সময় ছুরি, চিংড়ি ও লইট্টা শুঁটকি নিয়ে যান তিনি। বাজারে অন্য সবকিছুর মতো শুঁটকির দামও বেড়ে গেছে। আগে ৫০০ গ্রাম নিয়ে গেলেও এখন নিচ্ছেন ২০০ গ্রাম।

মাছের দামও বাড়তি

বাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই এখন বাড়তি। এর মধ্যে মাছের গায়েও হাত দেওয়া যাচ্ছে না। সব ধরনের সামুদ্রিক মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। লইট্টা মাছের দাম পড়ছে ২৫০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। নদীর চিংড়ির দাম সর্বনিম্ন ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা কেজি। ৫০০ টাকা কেজিতে যে চাষের চিংড়ি পাওয়া যেত, সেটা এখন ৬০০ টাকার নিচে মিলছে না।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ কারণে মাছ ধরা এখন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। তাই সামুদ্রিক মাছের দাম বেড়ে গেছে। এখন যে মাছ রয়েছে, তা মে মাসের মাঝামাঝিতে ধরা। আর সামুদ্রিক মাছ না আসায় নদী ও পুকুরের মাছের দামও বেড়ে গেছে।

আকারে বড় হলে চাষের রুই-কাতলার দামও ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি চাওয়া হচ্ছে। ছোট রুই-কাতলার কেজিও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। তবে চাষের কই, পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দাম খুব একটা বাড়েনি।

পেঁয়াজ-রসুনও বাড়ল

বাজারে পেঁয়াজ-রসুনের দাম আবারও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বাজারে এক সপ্তাহ আগে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়, তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। আর জাতভেদে রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা কেজি। অথচ ঠিক সাত দিন আগে ছিল ১৬০-১৬৫ টাকা কেজি।

বহদ্দারহাটের শাহজালাল স্টোরের ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজ–রসুনের দাম কিছুটা বাড়তির দিকে। আদার দাম আগের মতোই আছে। তবে চালের দাম ভালোই বেড়েছে। বেতি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, জিরাশাইল ৭৫, নাজিরশাইল ৮২, কাটারিসিদ্ধ ৭৫ টাকা। সব কটি চালই বস্তায় (৫০ কেজি) ৩০০ টাকা করে বেড়েছে।