গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ সভা শুরু হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব, প্রক্টর রাজিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক সেখানে উপস্থিত আছেন।
এদিকে আজ সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা আবার ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও ফার্মেসি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অন্যান্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল আলোচনায় বসেছেন। আলোচনার পর নতুন কর্মসূচি জানানো হতে পারে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। আজ বিকেল পাঁচটায় ওই সময়সীমা শেষ হবে।
জানতে চাইলে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, ‘আমার বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন যদি ধর্ষকের ছবিসহ নাম প্রকাশ না করে তাহলে সারা দেশে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।’
উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব প্রথম আলোকে বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে আন্দোলন করছে এবং ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছে। প্রশাসন এটা নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করা হবে এবং তাঁদের ছবিসহ নাম প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীরা এই ২৪ ঘণ্টায় আন্দোলনে যাবে না বলে তিনি আশা করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রী গতকাল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এই মামলায় গতকাল তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি বলা যাবে না।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ও ছাত্রী গোপালগঞ্জ শহরের হেলিপ্যাড থেকে নবীনবাগের দিকে ফিরছিলেন। এ সময় চার থেকে পাঁচ দুর্বৃত্ত তাঁদের গতি রোধ করে। দুর্বৃত্তরা ছাত্রকে মারপিট করে ওই ছাত্রীকে পাশের নির্মাণাধীন জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ ভবনে নিয়ে ধর্ষণ করে। রাতে ধর্ষণের খবর ক্যাম্পাসে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জ থানা ঘেরাও করেন। এরপর গতকাল সকাল ছয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোনাপাড়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ নামেন। গতকাল শিক্ষার্থীরা দিনভর ঢাকা–খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে নিয়ে অবরোধ তুলে নেন।