মোংলা বন্দর ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় পশুর নদ খননের বালুর কবল থেকে দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা এলাকার ফসলি কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আয়োজিত দাকোপের বানীশান্তা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, মোংলা বন্দর ড্রেজিং প্রকল্পের কারণে পশুর নদ খনন করা হচ্ছে। এটা নিয়ে কৃষকদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যেখানে প্রতিবছরের মতো প্রচুর পরিমাণে তরমুজের চাষ হয়েছে, যে এলাকায় ধান ও সবজি চাষ করে এলাকার কৃষক পরিবার জীবন–জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যয়ভার মিটাচ্ছে, তেমন এলাকায় এ প্রকল্প হলে এলাকার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন। প্রকল্প এলাকায় বেশ কয়েকটি মিষ্টি পানির পুকুর ও জলাশয় আছে। যে পুকুর ও জলাশয়ের পানি দিয়েই কৃষিকাজ চলে। এই পুকুরের পানি এলাকার মানুষ গোসল করাসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করেন। এলাকার গবাদিপশুর খাবার পানিও এই মিষ্টি পানির পুকুর থেকে আসে। এ এলাকায় বালু ফেলা হলে জলাশয়গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এলাকায় মিষ্টি পানির দুর্যোগ দেখা দেবে।
বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় ৬০০ মানুষ তথা প্রায় ১৫০ পরিবারের বসতভিটা সম্পূর্ণ প্রকল্পের মধ্যেই অবস্থিত। দীর্ঘকাল থেকে এই পরিবারগুলো এখানে বসবাস করছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিবারগুলো বসতভিটা হারাবে এবং উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে।
এলাকায় তরমুজসহ কৃষিব্যবস্থা রক্ষা, দীর্ঘদিনের মানববসতি ও গোচারণ ভূমি রক্ষায় জরুরিভাবে বানীশান্তা এলাকায় পশুর নদ খননের বালু ফেলা বন্ধের দাবি জানান বক্তারা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এলাকার কৃষি ও প্রতিবেশব্যবস্থা রক্ষায় বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তাঁরা।
বানীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য পাপিয়া মিস্ত্রীর সভাপতিত্বে এবং কৃষক ও কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনের সংগঠক কৃষ্ণপদ মণ্ডলের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন বানীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জয়কুমার মানিক, লবণ জল প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায়, কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও সাবেক ইউপি সদস্য হিরণ্ময় মণ্ডল, বাপার দাকোপ প্রতিনিধি ইসরাফিল বয়াতি, বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান, শিক্ষক মৌসুমী হালদার, সুমতি মণ্ডল পরিমল হালদার, মাখন রায়, ঋষিকান্ত মণ্ডল প্রমুখ।