নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ দুবারের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মনোনয়ন দিয়েছে। তবে তাঁর পক্ষে এখনো নির্বাচনী প্রচারকাজে নারায়ণগঞ্জ–৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানকে দেখা যায়নি। গুঞ্জন আছে, নির্বাচনে শামীম ওসমান দলের প্রার্থী আইভীর বিপক্ষে কাজ করছেন। তাঁর ইন্ধনে তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। গত দিনে নানা ইস্যুতে আইভী-শামীম ওসমানের প্রকাশ্যে বিরোধ দেখা গেছে। এসব নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইয়ের সঙ্গে।
প্রথম আলো: নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শামীম ওসমান একটি ফ্যাক্টর। তবে সিটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না...
আবদুল হাই: কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি সম্পর্কে সব জানেন। কেউ যাতে নির্বাচনে দলের বাইরে গিয়ে প্রভাব সৃষ্টি করতে না পারেন, সে কারণে কেন্দ্র ওয়ার্ড ভাগ করে দায়িত্ব দিয়েছে। বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আজ ডাকা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারা কথা বলবেন।
প্রথম আলো: গুঞ্জন আছে শামীম ওসমান দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করছেন, এটা কতটুকু সত্য?
আবদুল হাই: দলের বাইরে গিয়ে কেউ কখনো সুবিধা করতে পারেননি। তিনি যত বড় প্রভাবশালী নেতাই হোন না কেন। সিটি নির্বাচনের বিষয়টি কেন্দ্র জানে, তারা বিষয়টি দেখছে। এ কারণেই দলের থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ডেকেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বললেই তাঁদের মনোভাব বোঝা যাবে।
প্রথম আলো: আইভী অভিযোগ করেন, তৈমুর কারও ইন্ধনে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, নির্বাচন করছেন—আপনি কী মনে করেন?
আবদুল হাই: আইভীর পক্ষে শামীম ওসমানকে মাঠে দেখা যায়নি, এটা সত্য। কিন্তু তিনি বিপক্ষে কাজ করছেন, সেই ধরনের প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তাই প্রমাণ পাওয়ার আগেই বলা যাবে না তিনি আইভীর বিপক্ষে কাজ করছেন।
প্রথম আলো: কেন্দ্রের নির্দেশের পরও শামীম ওসমানকে আইভীর পক্ষে মাঠে নামতে দেখা যায়নি...
আবদুল হাই: তিনি (শামীম ওসমান) মাঠে নামেননি, পরে হয়তো নামবেন। উনি তো নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেই সাংসদ হয়েছেন। উনি তো দলের বাইরের কেউ নন।
প্রথম আলো: নির্বাচনের আগে দলীয় বিভক্তি নিরসনে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন আপনারা?
আবদুল হাই: কেন্দ্র থেকে সিটি নির্বাচনের সার্বিক বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে। যখন যেখানে যা করার প্রয়োজন, নিশ্চয়ই কেন্দ্র সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রথম আলো: দলের বাইরে গিয়ে কেউ অবস্থান নিলে সে ক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থান কী হবে?
আবদুল হাই: বিগত ইউপি নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে কাজ করায় ৩০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারোর বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে দল বড়। তাই দলের বাইরে গিয়ে অবস্থান নিলে সে যত বড় নেতা হোন না কেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতীতে এমন অনেক নজির আছে।