নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারকে সাংসদ শামীম ওসমানের প্রার্থী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। আজ শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেউলী চৌরাপাড়া এলাকায় গণসংযোগের সময় তিনি এ কথা বলেন।
শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সাংসদ। তাঁর বড় ভাই সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ (শহর-বন্দর) আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ।
গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের বন্দরের লক্ষ্মণখোলা এলাকায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন জাপা–দলীয় চার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তাঁরা সবাই সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আইভীর গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গসংগঠনসহ মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন।
আইভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তৈমুর আলম খন্দকার গডফাদার শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের প্রার্থী। উনি বিএনপির প্রার্থী না, স্বতন্ত্র প্রার্থী না; তিনি ওসমান পরিবারের প্রার্থী।’ আইভী আরও বলেন, ‘গতকালের প্রচারণায় আপনারা দেখেছেন, সেখানে সাংসদ সেলিম ওসমানের অনুসারী চার ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর সঙ্গে ছিলেন। এতে প্রমাণিত হয়, সারা নারায়ণগঞ্জে কয়েক দিন ধরে যে গুঞ্জন ছিল—তৈমুর আলম খন্দকার গডফাদার শামীম ওসমানের প্রার্থী—সেটি প্রমাণিত হয়েছে।’
এ ঘটনায় দলে বিভেদ স্পষ্ট হলো কি না, তা জানতে চাইলে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘সেটি জানি না। তবে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সবাই আমার সঙ্গে আছেন। প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। একমাত্র তাঁদের (শামীম ও সেলিম) লোকজনই তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে কাজ করছেন।’
দলের হাইকমান্ডকে বিষয়টি জানাবেন কি না, তা জানতে চাইলে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘হাইকমান্ড সব দেখেছেন, তাঁরা বিষয়টি দেখছেন। আমি নির্বাচন করি জনতার শক্তি নিয়ে। জনতাই আমার শক্তি। দল আমার মনোবল। সবকিছু মিলিয়ে আমি নির্বাচন করি। আমি কোনো গডফাদারের দিকে তাকিয়ে নির্বাচন করি না।’
জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আইভী বিগত দিনে নারায়ণগঞ্জে প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যাসহ অনেক হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি জোরালো প্রতিবাদ করেছেন।
সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হতে ওসমান পরিবারের অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দল এবারও আইভীকে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও আওয়ামী লীগের অনেকে তলেতলে তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে কাজ করছেন বলে শহরে গুঞ্জন আছে। আইভীর নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় শামীম ওসমান ও তাঁর অনুসারী অনেক নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি।