তাসপিয়াকে গুলি করার কথা আদালতে স্বীকার করলেন রিমন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বাবার কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশু তাসপিয়া হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত মো. রিমন
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বাবার কোলে থাকা চার বছরের শিশু তাসপিয়া আক্তার ওরফে জান্নাতকে গুলি করার কথা স্বীকার করেছে এ ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি মো. রিমন (২৩)। বৃহস্পতিবার নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।

রিমন বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মোমিন উল্যাহর ছেলে। শিশু তাসপিয়া হত্যা মামলা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ ও সুবর্ণচরের চরজব্বর থানায় মারামারি, হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনে আরও নয়টি মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দি রেকর্ডের পর আসামি রিমনকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পরে রাতে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। রিমন বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মোমিন উল্যাহর ছেলে। শিশু তাসপিয়া হত্যা মামলা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ ও সুবর্ণচরের চরজব্বর থানায় মারামারি, হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনে আরও নয়টি মামলা রয়েছে।

জানতে চাইলে আদালতে তাসপিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. সবজেল হোসেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে তিনি বলেন, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিমন শিশু তাসপিয়াকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তিনি এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন।

পরিদর্শক মো. সবজেল হোসেন জানান,  বৃহস্পতিবার সকালে রিমনকে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩ নম্বর আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে রিমন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা সবজেল হোসেন জানান, জবানবন্দিতে আসামি রিমন শিশু তাসপিয়া ও তার বাবাকে গুলি করার কথা স্বীকার করেছেন। এ ছাড়া তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। জবানবন্দি প্রদান শেষে আদালতের নির্দেশে রিমনকে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত বুধবার বিকেলে শিশু তাসপিয়া আক্তারকে চিপস-জুস কিনে দিতে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর মালেকার বাপের দোকান এলাকায় যান প্রবাসী আবু জাহের। তিনি তাঁর ভাগনে আবদুল্লা আল-মামুনের দোকানে কথা বলছিলেন। এমন সময় পূর্ববিরোধের জের ধরে রিমন কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে সেখানে হামলা চালান। এ সময় জাহের তাঁর মেয়েকে কোলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালান রিমন। এতে শিশু তাসপিয়ার মাথা ও মুখমণ্ডল গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় এবং তার বাবা আবু জাহেরেরও চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় মারা যায় তাসপিয়া।

এ ঘটনায় তাসপিয়ার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বুধবার বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় মো. রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ তদন্ত করছে। এ মামলায় পুলিশ ও র‌্যাব এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে।