পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে যাতায়াতের সময় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা কমে আসবে। এতে এক দিকে যেমন ভোগান্তি কমবে, তেমনি যাত্রার ব্যয়ও সাশ্রয় হবে। সব মিলিয়ে সুফল পাবে ২১ জেলার মানুষ।
এখন মাওয়া–জাজিরায় পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে ফেরিতে দেড় ঘণ্টার মতো সময় লাগে।
আর আরিচা–পাটুরিয়ায় সময় লাগে ৪০ মিনিটের মতো। সমস্যা হলো, ঘাটে গিয়েই ফেরিতে ওঠার নিশ্চয়তা নেই। কখনো কখনো বাসকে সারা দিন–রাত ঘাটে বসে থাকতে হয় ফেরিতে উঠতে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা অঞ্চল) সবুজ উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে খুলনা, বরিশাল যেতে এখন যে সময় লাগে, পদ্মা সেতু চালু হলে মোটামুটি দুই ঘণ্টা কম লাগবে। সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে বরিশাল এবং ঢাকা থেকে খুলনা যেতে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে। অবশ্য এটা নির্ভর করছে রাস্তায় যানবাহনের চাপ কতটুকু, তার ওপর।
বন বিভাগের কর্মকর্তা মদিনুল আহসানের কর্মক্ষেত্র খুলনায়। বৃহস্পতিবার রাতে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, অফিসের প্রয়োজনে তাঁকে মাঝেমধ্যে ঢাকায় আসতে হয়। মাওয়া ফেরিঘাট দিয়ে আসতে তাঁর পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
কখনো কখনো বৈরী আবহাওয়া বা কুয়াশার কারণে সময় অনেক বেশি লাগে। অনেক সময় ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি বন্ধও থাকে। পদ্মা সেতু চালু হলে এসব সমস্যা থাকবে না। মানুষের ভোগান্তি কমবে।
ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে গত মার্চে চালু হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যেতে সময় লাগতে পারে ১ ঘণ্টার মতো।
সওজ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত চার লেন সড়ক নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছে সরকার। স্বাভাবিক সময়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা যেতে এখন সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। চার লেনের সড়কটি হয়ে গেলে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় কমে আসবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে ভূমি অধিগ্রহণে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। আগামী বছর ডিসেম্বরে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হবে। ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটিতে টাকা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হলে কী পরিমাণ যানবাহন চলতে পারে, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তাতে দেখা গেছে, ২০২২ সালে যদি পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়, ওই বছর সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে ২৩ হাজার ৯৫৪টি। যার মধ্যে বাস চলবে ৮ হাজার ২৩৮, ট্রাক ১০ হাজার ২৪৪টি, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে ৫ হাজার ৪৭২টি।