কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা নতুন বন্দীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। ১১ মার্চ থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন বন্দীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বন্দীদের মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষ বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করছে। আদালত থেকে কোনো আসামি এলে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ানো হচ্ছে এবং থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান বলেন, ১১ মার্চ থেকে কারাগারে আসা নতুন বন্দীদের বিশেষ কক্ষে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। নতুন বন্দীদের মধ্যে যাদের সর্দি, কাশি রয়েছে তাঁদের সম্পূর্ণভাবে আলাদা রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কারাগারে কোনো বন্দী আইসোলেশন নেই। তবে গত বৃহস্পতিবার এক বন্দী গাজীপুর কারাগার থেকে এসেছিল। তাঁর অবস্থা সন্দেহজনক হওয়ায় কুর্মিটোলার আইসোলেশন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী বলেন, কারা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী কারাগারে আসা নতুন বন্দীদের হাত ধোয়ানোর ব্যবস্থা করা, কারাগার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া কারাবন্দীদের তৈরি করা মাস্ক কারাগারে বন্দীদের মাঝে বিনা মূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। কিছু মাস্ক সাশ্রয়ী মূল্যে কারাগারের বাইরে কারা ক্যানটিনে বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন বন্দীদের আলাদা করে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা হচ্ছে। দুজন চিকিৎসক ও দুজন নার্স সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছেন। বন্দীদের কক্ষে সকাল ও সন্ধ্যায় দুইবার জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে।
জ্যেষ্ঠ জেল সুপার আরও বলেন, কারাগারে আসা বন্দীদের সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সচেতনতার জন্য কয়েক দিন ধরে মাইকিং করা হচ্ছে। তাঁরা যেন মাস্ক পড়ে আসেন। এ ছাড়া বন্দীদের সাক্ষাৎকক্ষের প্রবেশমুখে সাক্ষাৎপ্রার্থীদের হাত ধোয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাক্ষাৎপ্রার্থীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তাঁরা যেন আগামী মাস পর্যন্ত বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ সীমিত রাখেন। গত সপ্তাহ থেকে সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে।
আজ শনিবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কয়েক শ নারী পুরুষ বন্দীদের সাক্ষাৎ কক্ষে প্রবেশের জন্য সারি করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। অনেক নারীকে শিশুদের কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
লাইনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, কারা কর্তৃপক্ষ বন্দীদের স্বজনদের জন্য হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ানো কিংবা জীবানুমুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা করেনি। এতে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটতে পারে। আরেক বন্দীর স্বজন মনে করেন দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় কারাগার এলাকায় জীবাণুনাশক ছিটানো উচিত।