ট্রান্সফরমার বসানোর সময় লাইনে বিদ্যুৎ, প্রাণে বাঁচলেন শ্রমিক

রাজশাহী নগরের শ্রীরামপুর এলাকায় বৈদ্যুতিক কাজের সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হন দুই শ্রমিক
ছবি: প্রথম আলো

বিদ্যুতের ১১ হাজার কেভি লাইনে ট্রান্সফরমার বসানোর কাজ করছিলেন দুই শ্রমিক। এর মধ্য লাইনে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে আসে। বিকট শব্দে হাত ফসকে যায় তাঁদের। জ্ঞান হারিয়ে ঝুলছিলেন বিদ্যুতের খুঁটিতে। তবে কোমরে বেল্ট থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তাঁরা। এ ঘটনা ঘটে রাজশাহী নগরের শ্রীরামপুর এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) বিদ্যুতের খুঁটিতে।

ওই দুই শ্রমিক হচ্ছেন শামীম রেজা (২৫) ও আকবর আলী (৩৫)। তাঁদের বাড়ি রাজশাহী নগরের কাপাসিয়া এলাকায়। তাঁরা দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে ঠিকাদারের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। প্রায় ২০ মিনিট ঝুলে থাকার পর সহকর্মীরা তাঁদের খুঁটি থেকে নিচে নামিয়ে হাসাতালে নিয়ে যান। শঙ্কামুক্ত হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২–এর অধীনে নগরের শ্রীরামপুর এলাকায় একটি ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য লাইনে কাজ চলছিল। এ কাজের জন্য দুপুর ১২টা থেকে ১ ঘণ্টার জন্য ১১ হাজার কেভি লাইনে ‘শাটডাউন’ নেওয়া হয়। কিন্তু কাজ শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় লাইনে বিদ্যুৎ চলে আসে। তখন বিকট আওয়াজ হয়। তারপর দেখা যায়, বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে দুজন ঝুলছেন। প্রায় ২০ মিনিট তাঁরা এভাবে ঝুলে থাকেন। তারপর স্থানীয় লোকজন ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন তাঁদের মই দিয়ে খুঁটি থেকে নিচে নামান।

পরে যোগাযোগ করা হলে কর্মচারী শামীম রেজা বলেন, তিনি ও আকবর আলী লাইনে নাট লাগাচ্ছিলেন। তাঁদের ওপরের লাইনে ছিলেন আবদুল মতিন নামের আরও একজন। কাজ করার সময় বিকট আওয়াজে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন শামীম। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন তিনি দেখেন খুঁটিতে ঝুলেই আছেন। নিচে নামানোর পর আকবর আলীর জ্ঞান ফেরে। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় নেসকোর ৩৩ কেভি লাইনে কাজ করা অবস্থায় বিদ্যুৎ চলে এলে রেজাউল ইসলাম নামের নেসকোর এক কর্মী মারা যান। ওই লাইন মেরামতের ঠিকাদার আসাদুজ্জামান বলেন, এর আগেও একইভাবে কাজ করার সময় একজন কর্মী মারা যান। এটা কীভাবে হচ্ছে, তিনি বলতে পারবেন না। আগামী রোববার নেসকোয় একটি অভিযোগ করবেন। লাইনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে তিনি আর কাজ করবেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কীভাবে ঘটনাটি ঘটল, তা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে বলতে পারবেন।