ট্রলারে করে বন্ধুর জন্মদিন পালন করতে গিয়ে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে পড়ে গিয়ে মারা যাওয়া কিশোর দীপ ঘোষের মৃত্যু দুর্ঘটনায় নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তাকে ইচ্ছে করেই নদীতে ফেলে দিয়েছিল তার আরেক বন্ধু।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দীপ ঘোষের ওই বন্ধুকে (১৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বরিশাল নগরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়ি থেকে তাকে ২৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২ নভেম্বর ছিল গ্রেপ্তার কিশোরের (১৭) জন্মদিন। এ উপলক্ষে সে ৮-১০ জন বন্ধুকে নিয়ে সন্ধ্যায় একটি ট্রলার ভাড়া করে কীর্তনখোলা নদীতে ঘুরতে যায়। রাত আটটার দিকে কেক কেটে উল্লাস করার সময় দীপ ঘোষ নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ৩ নভেম্বর দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৫০ ফুট দূর থেকে দীপের মরদেহ উদ্ধার করে। দীপ নগরের আমানতগঞ্জ এলাকার মিন্টু ঘোষের ছেলে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দীপের মৃত্যুর ঘটনায় ৩ নভেম্বর বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। এরপর ২৪ নভেম্বর ঘটনার দিনের একটি ভিডিও ফুটেজ হাতে পায় পুলিশ। উদ্ধার করা ওই ভিডিও দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে দীপের মৃত্যু আসলে দুর্ঘটনাবশত নয়, বরং তাকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এরপর অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার ওই বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২ নভেম্বর জন্মদিন পালনের ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রেপ্তার ওই কিশোর তার বন্ধু দীপ ঘোষকে কোলে তুলে নিয়ে নদীতে ফেলে দিচ্ছে। দীপ সাঁতার জানত না। তাই সে আর বেঁচে ফিরতে পারেনি। যখন রিয়াদ ও তার বন্ধুরা বুঝতে পারে যে দীপ সাঁতার জানে না, তখন তারা চেষ্টা করেও আর তাকে তুলতে পারেনি। ততক্ষণে সে তলিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. রুমান জানান, গ্রেপ্তার কিশোর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর পারিবারিক অনটনের কারণে পড়াশোনা বাদ দিয়ে নগরের হাসপাতাল রোডে একটি জুতার দোকানে চাকরি করত।
অপর দিকে বরিশাল নগরের আমানতগঞ্জ এলাকার মিন্টু ঘোষের ছেলে দীপ ঘোষ এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় সে আবার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।