কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা আদায় করা হলেও রসিদ দেওয়া হয় না। ফলে ভাড়া আদায়ের হিসাবও থাকে না।
যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, রেলের কিছু কর্মকর্তা ওই টাকা আত্মসাৎ করছেন।
কাউন্টারে টিকিট দেওয়া বন্ধ আছে এক মাস ধরে। বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেন অনেকে।
নীলফামারী রেলস্টেশন থেকে স্থানীয় যাত্রীদের টিকিট দেওয়া বন্ধ আছে প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে। এরপরও বাধ্য হয়ে স্থানীয় যাত্রীদের বিনা টিকিটে রেলে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। ট্রেনে ওঠার পর তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হলেও দেওয়া হচ্ছে না টাকা গ্রহণের রসিদ। যাত্রীদের অভিযোগ, রেলের কিছু কর্মকর্তা ওই টাকা নিজেরা আত্মসাৎ করছেন। এ জন্য রসিদ দেওয়া হয় না।
গত শুক্রবার দুপুরে নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত আন্তনগর তিতুমীর ট্রেনে ভ্রমণ করে ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শতাধিক যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়, যাঁদের গন্তব্য চিলাহাটি। কাউন্টার থেকে টিকিট না পেয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠার অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা।
স্টেশনের টিকিট বুকিং সহকারী শামীম হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় এক মাস ধরে স্টেশন থেকে আসন বরাদ্দ নেই, এমন যাত্রীদের ট্রেনে ওঠার পর টিকিট দেওয়া বন্ধ আছে।
রাজশাহী থেকে চিলাহাটির উদ্দেশে ছেড়ে আসা তিতুমীর ট্রেনটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে নীলফামারী স্টেশনে পৌঁছায়। ওই ট্রেনে উঠে পড়েন যাত্রীরা। এরপর শুরু হয় ভাড়া আদায়ের কার্যক্রম।
ডোমার স্টেশন থেকে চিলাহাটি যাওয়ার জন্য বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠেন আইনুল হক (৩৫)। তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকেন মো. রাকিব নামের এক অ্যাটেনডেন্ট। যাত্রীর কাছে থেকে টাকা নিয়েও আদায়ের রসিদ না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভুল হয়ে গেছে। এমন ভুল আর হবে না।’
ডোমার উপজেলার ভোগডাবুরী ইউনিয়নের উত্তর কাওলা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৪৫) ওই ট্রেনে ভ্রমণের সময় বলেন, তিনি নীলফামারী স্টেশনের কাউন্টারে টিকিট নিতে গেলে জানানো হয় চিলাহাটির টিকিট নেই। বাধ্য হয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বিনা টিকিটেই ট্রেনে ওঠেন। টিটি দুজনের ভাড়া হিসেবে ৪০ টাকা নেন। কিন্তু কোনো টিকিট বা টাকা আদায়ের রসিদ দেন না। চাইলে বলেন, রসিদ দিলে জরিমানাও দিতে হবে।
এ বিষয়ে কথা বললে ওই ট্রেনের টিটিসি কিশোরী মোহন রায় চৌধুরী বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করে টিকিট বা রসিদ না দেওয়াটা কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে না।
নীলফামারী স্টেশন মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম বলেন, নির্দেশনা না থাকায় নির্ধারিত আসনের বিপরীতে কোনো টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। তবে বিনা টিকিটে ভ্রমণকারী যাত্রীদের কাছে থেকে ভাড়া আদায় করতে হলে জরিমানাসহ করতে হবে।