ফিরতি টিকিটের জন্য রাজশাহী রেল স্টেশনে গিয়ে কাউন্টারের সামনের সারিতে দাঁড়ালেই মিলছে খেজুর আর শরবত। গত দুই দিনে ১ হাজার টিকিট প্রত্যাশী ও রেলওয়ে কর্মচারীদের এই শরবত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান সংকেত ও টেলিকম প্রকৌশলী অসীম কুমার তালুকদার।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আগামী ১৭ আগস্টের ঢাকায় ফেরার টিকিট আজ বৃহস্পতিবার এবং তার আগের দিন বুধবার ১৬ তারিখের টিকিট দেওয়া হয়েছে। এই দুই দিনে স্টেশনে টিকিটের জন্য মানুষ আগের দিন রাত ১২টা থেকে সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সকাল সোয়া নয়টায় টিকিট দেওয়া শুরু হচ্ছে, ১১টার দিকেই সব টিকিট শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফিরতি টিকিটের অর্ধেক সরাসরি স্টেশনে আর বাকিটা অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।
অসীম তালুকদারের এমন উদ্যোগে খুশি টিকিট কিনতে আসা যাত্রীরাও। তাদের মতে অনেকেই রাত জেগে সারিতে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে আছেন। তারা খেজুর আর এক গ্লাস শরবত খেয়ে অনেকটা শক্তি ফিরে পাচ্ছেন। তারা বলছেন, স্টেশনে টিকিট কিনতে এসে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এবার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ তাদের ভালো লাগছে।
অগ্রিম টিকিট নিতে আগের দিন থেকেই সারিতে দাঁড়িয়েছেন রায়হান তামজীদ। তিনি বলেন, ‘এখানে সিরিয়াল ধরে রাখার জন্য সারি ছেড়ে যাওয়া যায় না। আবার অনেক গরম। এমন সময় পানি খেজুর আর শরবত নিয়ে কেউ হাজির হবে এটা কখনো কল্পনাই করিনি।’ তিনি এমন উদ্যোগের জন্য অসীম কুমার তালুকদারকে ধন্যবাদ জানান।
এটা সরকারি কোনো বরাদ্দ নাকি নিজের থেকে করছেন জানতে চাইলে অসীম তালুকদার বলেন, এটা আত্মতৃপ্তির জন্য তিনি নিজে করছেন। অনেকেই রাত জেগে ক্লান্ত হয়ে আছেন। চোখে মুখে ঘুম-ঘুম ভাব। তবু লাইন ছেড়ে যেতে পারছেন না। একটা খেজুর আর এক গ্লাস শরবত তাদের অনেকটা প্রাণশক্তির জোগান দেবে। এই চিন্তা থেকে এই উদ্যোগ।
অসীম তালুকদার বলেন, গত মঙ্গলবার ৩০০, বুধবার ৫০০ এবং বৃহস্পতিবার আরও ৫০০ লোককে তিনি খেজুর এবং শরবত দিয়েছেন। শুক্রবার আরও লোক বাড়তে পারে সে জন্য বাড়তি প্রস্তুতি রেখেছেন। তিনি রেলওয়ের দায়িত্বরত কর্মচারীদেরও এই সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন এই শরবত বিশুদ্ধ পানি, লেবু, ভুসি দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বানানো হচ্ছে।